প্রিন্ট এর তারিখঃ ফেব্রুয়ারী ১, ২০২৫, ৩:৪৮ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১০, ২০২০, ৪:৫৬ এ.এম
মাগুরা সদর উপজেলায় এক গৃহবধূ খুন
মোঃ রনি আহমেদ রাজু ক্রাইম রিপোর্টার মাগুরা
মাগুরা সদর উপজেলার রাঘবদাইড় ইউনিয়নের পাকাখর্দ গ্রামের একটি বাগান থেকে হেনা বেগম ৩৪ নামে এক গৃহবধূর জবাই কৃত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদেহের গলায় ফাঁসসহ শরীরে একাধিক ক্ষত আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঘটনার পর থেকে হেনার স্বামী মফিজুর রহমান নিখোঁজ রয়েছেন। অন্যদিকে মফিজুর রহমানের মোবাইল ফোন সেটসহ আব্দুর রাজ্জাক ২৮ নামে এক নসিমন চালককে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত হেনা বেগম মফিজুর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রী। তার বাবার বাড়ি ঝিনাইদহের অচিন্ত নগর।
মাগুরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জয়নাল আবেদিন জানান, রবিবার ৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে এলাকাবাসির খবরের গৃহবধূ হেনা বেগমের স্বামী মফিজুর রহমান এর বাড়ির নিকটবর্তী একটি বাগান থেকে তার লাশ উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ। নিহতের গলায় ফাঁসের দাগসহ শরীরে একাধিক ক্ষত আছে। ঘটনার পর থেকে তার স্বামী মফিজুর রহমান নিখোঁজ রয়েছেন মফিজুরের ফোন সেটটি পাওয়া গেছে একই এলাকার দোড়া মতনা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক ২8নামে এক নসিমন চালকের কাছে । তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। আটক আব্দুর রাজ্জাক ওই ফোন সেটটি কুড়িয়ে পেয়েছে বলে পুলিশকে জানিয়েছে। স্বামী মফিজুরের সন্ধানসহ ঘটনার জোর তদন্ত করছে পুলিশ।
আজ দুুপুর আনুমানিক ১টার সময় মফিজুর রহমানের বাড়ীর ২০০ গজ উত্তরে একটি জঙ্গলের ভিতরে হেনা খাতুন এর লাশ পাওয়া যায়। স্থানীয় সুমন নামে একজন লাশ দেখে এলাকাবাসীকে খবর দিলে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় মাগুরা থানার পুলিশ লাশটি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। নিহত হেনা খাতুন এর ভাই ফরিদ জানান, আজ দুপুর তিনটার দিকে আমাদের এলাকায় চৌকিদারের মাধ্যমে আমরা খবর পাই আমার বোন হেনা খাতুন কে নির্মমভাবে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন বিগত ১৮ বছর আগে পাকা খার্দ্দ গ্রামের মোঃ মফিজুর রহমান পিতাঃ মৃত রমজান বিশ্বাসের ছেলের সাথে আমার বোন হেনা খাতুনের বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকেই মোঃ মফিজুর রহমান ও তার ভায়েরা এবং পরিবারের লোকজন বিভিন্ন সময়ে যৌতুকের জন্য আমার বোনকে নানা ভাবে নির্যাতন করতো। কখনো কখনো মফিজুর রহমানের বড় ভাই মিজানুর রহমান, ছোট ভাই জিল্লুর রহমান, ও কামরুজ্জামান আমার বোন কে তালাক দেওয়ার কথা বলে আমার ভগ্নিপতিকে চাপ দিত।যে তালাক দিয়ে দে যত টাকা লাগে আমরা দিব।কিছু দিন আগেও আমার বোনের ব্যবহারকৃত আসবাবপত্র সহ তাকে বাড়ী থেকে বের করে দেয় আমার ভগ্নপতির ভাই মিজানুর রহমান। আমার বোন জামাই মোঃ মফিজুর রহমান কে আমরা সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য ছয় লক্ষ টাকা প্রদান করি। তারপর উনি সৌদি আরব থেকে ফেরত এসে একাধিকবার যৌতুকের জন্য আমার বোনকে নির্যাতন করত। একাধিকবার আমরা বিভিন্ন ভাবে জমিজমা বিক্রি করে যৌতুকের টাকা প্রায় ০৮ লক্ষ টাকা পরিশোধ করি। সর্বশেষ গত কয়েকদিন আগে সে আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। গতকাল ০৫ সেপ্টম্বর আমরা তাকে ২০০০০ টাকা একটি স্থানীয় এনজিওর মাধ্যমে উত্তোলন করে প্রদান করি। এই টাকা নিয়ে আমার বোন মফিজুর রহমানের বাসায় যায়। তারপর আমরা তার মৃত্যুর খবর পায়। হত্যার বর্ণনা দিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন চাকু দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ৫-৭ জায়গায় আঘাত করে জবাই করা হয়েছে। সরেজমিন অনুসন্ধান করে দেখা যায় যে, মফিজুর রহমান ও তার ভাই মিজানুর রহমান, জিল্লুর রহমান, কামরুজ্জামান ও তার ভাতিজা রিপন বিশ্বাস বিভিন্ন সময় হেনা খাতুন এর উপর নির্যাতন চালাতো এবং তাকে তালাক দেওয়ার কথা বলতো। এলাকাবাসী জানান যে তারা দীর্ঘদিন যাবত ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থেকে বিভিন্নভাবে অবৈধ ক্ষমতার প্রদশর্দন করে মানুষকে হয়রানি করে আসছে।নিহতের ভাই জানান আমদের অভিযোগ ১। মোঃ মফিজুর ২। মিজানুর রহমান ৩। জিল্লুর রহমান ৪। কামরুজ্জামান, সর্ব পিতা রমজান বিশ্বাস ৫।রিপনব বিশ্বাস সহ পরিবারের লোকজন আমার বোনকে সহ্য করতে পারত না। এরাই পরিকল্পিতভাবে আমার বোনকে জবাই করে হত্যা করেন
শিক্ষাতথ্য টিভি