বিএনপি-জামায়াতের অতীতের অগ্নি
সন্ত্রাসের রাজনীতির দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন
সম্প্রতি কয়েকটি বাসে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। কেউ কোনভাবেই যেন
ধ্বংসাত্মক রাজনীতির পথে দেশকে নিতে না পারে সেজন্য দেশবাসীকে সতর্ক
করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা যখন চলছে তখন
আসলো ঘুর্ণিঝড়, তারপর আসলো বন্যা। এর মধ্যে কোন কথা নাই বার্তা নাই কয়েকটি
বাসে আগুন দিয়ে অগ্নি সন্ত্রাস। কেন কি স্বার্থে, কার জন্য?’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন হয়, নির্বাচনে
অংশগ্রহণের নামে অংশগ্রহণ করে, টাকা পয়সা যা পায় পকেটে রেখে দেয়,
নির্বাচনের দিন নির্বাচনও করে না, এজেন্টও দেয় না, কিছুই করে না। মাঝপথে
ইলেকশন বয়কট নাম দিয়ে বাসে আগুন দিয়ে এভাবে একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে
চায়।’
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা
রোববার জাতীয় সংসদে মুজিববর্ষে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ এর
(১) বিধির আওতায় তার নিজের আনিত প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় একথা বলেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময়
অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ জাতীয় সংসদের
রাষ্ট্রপতি বক্স থেকে এ সময় অধিবেশন প্রত্যক্ষ করছিলেন।
এর আগে ৯ নভেম্বর মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিশেষ
অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি স্মারক ভাষণ দেন। ওই দিনই প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা
শেখ হাসিনা জাতির পিতাকে সম্মান জানাতে ১৪৭ এর (১) বিধিতে এই সাধারণ
আলোচনার প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
এই প্রস্তাবের উপর সংসদের গত ৫ কার্যদিবস সংসদ সদস্যরা ধারাবাহিকভাবে আলোচনার পর এ দিন প্রস্তাবটি সর্ব সম্মতিতে গৃহীত হয়।
বাস পোড়ানোর ঘটনা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, এটার উদ্দেশ্যটা কি ? আজকে বাংলাদেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, একদিকে করোনা সামলাচ্ছি
অন্যদিকে অর্থনীতির গতিটা যাতে সচল থাকে তার ব্যবস্থা নিয়েছি। আবার বিশেষ
প্রণোদনাও দিয়েছি। আমাদের বাজেটের প্রায় ৪ শতাংশ এই প্রণোদনা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘টাকা-পয়সা যেখানে যা
দরকার তা দিয়ে মানুষের জীবন যাত্রা যাতে সচল থাকে আমরা সেই ব্যবস্থা
নিয়েছি। ইতোমধ্যে আগাম টাকা-পয়সা দিয়ে সরকার করোনাভাইরাসের ভ্যকাসিন কেনার
উদ্যোগও নিয়েছে।’
পুলিশ জানায়, গত ১২ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার)
দুপুর থেকে রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে নগরীর বিভিন্ন স্থানে ১১টি বাসে
অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৮টি থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। যার অধিকাংশের অভিযুক্তই
বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অনেক কাজ
করেছি, অনেক দূর এগিয়ে দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশ
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত হয়েছে। আগে যেখানে বাংলাদেশ ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে
চলতো এখন আর চলে না।’
তিনি বলেন, ৯০ শতাংশ বাজেট নিজেদের অর্থেই
আমরা বাস্তবায়ন করছি এবং পদ্মা সেতু নিজেদের অর্থে করার যে চ্যালেঞ্জ
নিয়েছিলাম সেটাও আমরা করে যাচ্ছি।
তাঁর সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার
প্রচেষ্টা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আধুনিক বিজ্ঞান মনস্ক এবং
প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন জাতি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি।’ স্বাক্ষরতার হার
বৃদ্ধি এবং চিকিৎসা সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ায় সরকারের উদ্যোগ
প্রসংগে প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘ জাতির পিতা যেভাবে চেয়েছিলেন সেভাবে করতে না
পারলেও কমিউনিটি ক্লিনিক করে মানুষের দোরগোড়ায় ৩০ প্রকার ওষুধ বিনামূল্যে
পৌঁছে দিচ্ছি। তবে, করোনাভাইরাস নামের উৎপাতের কারণে আমাদের অগ্রযাত্রা
কিছুটা হলেও ব্যহত হলো। যদিও সেটাও আমরা মোকাবেলা করে চলেছি।’
সূত্র : বাসস