যৌতুক
লোভী শিক্ষক স্বামী ও শশুর রড দিয়ে পেটালো শিক্ষিকা স্ত্রীকে
মোঃ রনি আহমেদ রাজু ক্রাইম রিপোর্টার
যৌতুকের লোভে স্ত্রী দের ওপর অত্যাচার কোন নতুন ঘটনা নয়। বহুকাল ধরেই সমাজে
নারীর এই অসন্মান মানহানি হয়েই চলেছে। এর প্র’তিবাদ হয়েছে প্রচুর, এসেছে
নতুন নতুন আইন, কিন্তু মানসিকতার কোন উন্নতি হয়নি। পুরুষ শাসিত এই সমাজে
নারীদের প্রতি এই অত্যাচার হয়েই চলেছে এবং এইভাবে চলতে থাকছে বলে আমাদের
সমাজ ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছে।
ছাব্বিশ বছর বয়সি শারমিন আক্তার পেশায় শিক্ষিকা। তার স্বামী আব্দুল মমিনও
পেশায় একজন শিক্ষক।
কিন্তু সব শিক্ষক যে সবসময় শিক্ষিত হবে তার তো কোন কথা
নেই। তার পাষণ্ড স্বামী ও শ্বশুর তার পিঠ ও হাত থেকে কোমর পর্যন্ত রড দিয়ে
পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ঘরেতালা লাগিয়ে রেখেছিল।
পরে শনিবার বিকেলের দিকে ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাকে উদ্ধার করে, জামালপুরের
বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে তাকে। জানা যায়
যৌতুকের কারণে স্বামীর ও শ্বশুর এর হাতে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন ওই
শিক্ষিকা।
নির্যাতিতার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শারমিন আক্তার বকশীগঞ্জ পৌর
এলাকার হযরত শাহজামাল বিদ্যা নিকেতনের সহকারী শিক্ষিকা। বকশীগঞ্জ পৌরসভার ৯
নম্বর ওয়ার্ডের চরকাউরিয়া মাস্টারবাড়ি এলাকার মৃত নূর ইসলামের মেয়ে।প্রায়
ছয় বছর আগে পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর মাঝপাড়া গ্রামের আব্দুল মমিনের
সঙ্গে শারমিনের বিয়ে হয়। তাদের তাসফিয়া নামে এক মেয়ে রয়েছে। আব্দুল মমিনও
স্থানীয় অ্যাডভ্যান্স কিন্ডার গার্টেনের সহকারী শিক্ষক। হোসেন আলীর ছেলে
আব্দুল মমিন।দরিদ্র পরিবারের সন্তান শিক্ষিকা শারমিন। আব্দুল মমিন বিয়ের পর
থেকেই যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময় তার স্ত্রী শারমিনকে নির্যাতন করেছেন।
ইদানিং স্থানীয় চরকাউরিয়া বাজার সংলগ্ন শারমিনের বাবার রেখে যাওয়া জমি জোর
করে লিখে নেয়ার জন্য শারমিনকে চাপ দিচ্ছিলেন শারমিনের স্বামী। এ নিয়ে বেশ
কিছুদিন ধরে শারমিনের ওপর চলে ধারাবাহিক নির্যাতন।
এই ক্ষোভ জমিয়ে রাখতে রাখতেই গত শুক্রবার গভীর রাতে আব্দুল মমিন লোহার রড
দিয়ে শারমিনকে নির্মম ভাবে পেটান। শারমিনের শ্বশুর হোসেন আলীও এই পাশবিক
অত্যাচারে পিছুপা হন নি। এতে শারমিনের বাম হাত, পিঠ থেকে শুরু করে নিচের
দিকে কোমর ও পায়ে রক্ত জমে দাগ হয়ে আছে প্রায় সমস্ত জায়গাতে।