জো বাইডেনের কাছে হেরে তিক্ত, বিরক্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড
ট্রাম্প। নির্বাচনের এক মাস পর তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে
দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন তিনি।
নির্বাচনে পরাজয় স্বীকারে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছেন ট্রাম্প। তার আইনজীবী,
সমর্থকরা বুধবারও ভোট গণনায় অস্বচ্ছতার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। নতুন
নির্বাচন আয়োজনে সামরিক আইন জারির মতো অস্বাভাবকি হস্তক্ষেপের হুমকি
দিচ্ছেন তারা।
সম্প্রতি প্রকাশ করা ৪৬ মিনিটের দীর্ঘ ভিডিওতেও তিনি দাবি করেছিলেন, ভোট গণনায় কারচুপির মাধ্যমে তার বিজয় ডাকাতি করা হয়েছে।
কিন্তু মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের ক্রিসমাস পার্টিতে ট্রাম্প বলেন, সম্ভবত
তিনি নির্বাচনে লড়াইয়ে হেরে গেছেন। তবে একবার প্রেসিডেন্ট হয়ে দমে যাবেন না
বলেও জানান তিনি।
বলেন, চারটি বছর অসাধারণ কাটছে। আরো চার বছরের জন্য আমরা চেষ্টা করছি। যদি না হয়, চার বছর পর আবারও আপনাদের দেখতে পাবো।
গেল প্রায় একমাস ধরে বাইডেনের বিজয়কে উল্টে দেওয়ার জন্য ব্যর্থ
অনুসন্ধান চালিয়েছেন ট্রাম্প। যা এখনও অব্যাহত। নতুন বক্তব্যের মাধ্যমে
উচ্চবিলাসী ট্রাম্প হার স্বীকারের দ্বারপ্রান্তে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ব্যাটলগ্রাউন্ড বা তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ রাজ্যের ৬ টিতেই জয়ী
ডেমোক্র্যাটরা। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ট্রাম্পের চেয়ে ৭০ লাখের মতো
জনপ্রিয় ভোট বেশি পেয়েছেন বাইডেন। শতকরা হিসেবে বর্তমান প্রেসিডেন্টের চেয়ে
অপ্রতিরোধ্য ৪ শতাংশ ভোট এগিয়ে তিনি।
মঙ্গলবার মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারলে জানান, নির্বাচনে কারচুপির পর্যাপ্ত
প্রমাণ পায়নি বিচার বিভাগ। যা দিয়ে বাইডেনের বিজয় পাল্টে দেওয়া সম্ভব।
২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের লক্ষে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বাইডেন। এক
সাক্ষাতকারে নিউইয়র্ক টাইমসকে তিনি জানিয়েছেন, কিভাবে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার
করবেন সে পরিকল্পনা।
‘পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ রয়েছে’
ট্রাম্প জনসম্মুখে এখনও ৩ নভেম্বর নির্বাচনের হার স্বীকার করেননি। একবার
দায়িত্ব পালনের পর তাকে জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ তার।
হোয়াইট হাউসে একরকম আবদ্ধ থাকছেন ট্রাম্প। জনসম্মুখে আসছেন কম। কিছু
কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করছেন। বাকি সময় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ
তুলে অদ্ভুত সব টুইট পোস্ট দিচ্ছেন।
তবে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প হোয়াইট হাউস ত্যাগের
প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিন সন্তান ডন জুনিয়র, এরিক, ইভাঙ্কা ছাড়াও ইভাঙ্কার
স্বামী জ্যারেড কুশনার এবং ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী রুডি জুলিয়ানির
জন্য পূর্ববর্তী রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ঘোষণার পরিকল্পনা করছেন।
বুধবার টুইটারে নির্বাচনের ওপর একটি আনুষ্ঠানিক বার্তা প্রকাশ করেন
ট্রাম্প। ‘আমি এ পর্যন্ত যত বক্তব্য দিয়েছি, সম্ভবত আমার দেওয়া সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ হতে যাচ্ছি এটি’; বলেই কথা বলা শুরু করেন ট্রাম্প।
আরম্ভ করেন নির্বাচন নিয়ে অভিযোগের পুরনো গীত। বলেন, ডেমোক্র্যাটরা
করোনা ভাইসরাসকে ব্যবহার করে ব্যাপকভাবে মেইল ইন ভোট গ্রহণের সুযোগ দিতে
বাধ্য করেছে। বাইডেনকে সহায়তা করতেই এ জালিয়াতি, কারসাজি করা হয়েছে।
এ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। এটা সবাই জানে। বলেন ট্রাম্প।
নিজেকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এটি পরিসংখ্যানগতভাবে অসম্ভব যে আমার
প্রশাসনে নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তিটি হেরে গেছেন। নির্বাচনে কারচুপির যথেষ্ট
পরিমাণ তথ্য প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে।
ফলাফলের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের সমর্থকরা লড়াই অব্যাহত রেছেন। রুডি জুলিয়ানি
বুধবার মিশিগান রাজ্যের আইনসভায় উপস্থিত হয়ে নির্বাচনে অনিয়মের পক্ষে দাবি
তুলে ধরেন।
ট্রাম্পের আরেক আইনজীবী সিডনি পাওয়েল জর্জিয়ায় আয়োজিত সমাবেশ থেকে সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের ভোট গণনা করাই হয়নি।
তবে বারের বক্তব্যের কারণে তার সঙ্গে প্রেসিডেন্টে তিক্ততা শুরু হয়েছে।
বারের বক্তব্য ট্রাম্প প্রশাসনের অন্যদেরে বক্তব্যেরও ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে।
বলেন, নির্বাচনে ভিন্ন ফল আসতে পারে এখনও পর্যন্ত আমরা এমন পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ পাইনি।