নারায়ণগঞ্জের
আড়াইহাজারে
প্রেমিকা কে হত্যার পর ফ্লোর থেকে লাশ উদ্ধার করল পিবিআই।
মোঃ রনি আহমেদ রাজু ক্রাইম রিপোর্টার
নারায়ণগঞ্জ এর আড়াইহাজারে ফাতেমা আক্তার নামে এক নারীকে হত্যার রহস্য
উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।জানা গেছে ইউনুছ আলী ও
ফাতেমার প্রেমের সর্ম্পক ছিল। সর্বশেষ ফাতেমাকে ডেকে এনে শারীরিক
সম্পর্কের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে ইউনুছ। পরে লাশ নিয়ে চাপা দেওয়া হয় পাশের
নির্মাণাধীন ঘরের মেঝে খুঁড়ে।আর পরদিন বাড়িটির মালিককে খুনি নিজেই বলেছেন
দ্রুত ঘরের মেঝে পাকা করেন প্রয়োজনে টাকা আমি দেব। পরে গন্ধ ছড়ালেই বেড়িয়ে
আসে সেই প্রেমিকার লাশ। সিলেটের জৈন্তাপুর ভারতীয় সীমান্তবর্তী পাহারী
এলাকা থেকে আড়াইহাজারের সেই প্রেমিক ইউনুছ আলীকে গ্রেফতারের পর আজ শনিবার এ
তথ্য জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
জানা গেছে আড়াইহাজার থানার মানিকপুরে অবস্থিত মামা ইলিয়াস মোল্লার
বাড়িতে থাকতেন ফাতেমা আক্তার। তার ঠিক পাশেই এক বাড়িতে ছিল আসামি ইউনুছ
আলী। দীর্ঘ ৯ বছর মালয়েশিয়ায় প্রবাস জীবন কাটিয়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে
সে দেশে আসে। এসময় ফাতেমার নানি বিভিন্ন অজুহাতেই ইউনুছকে বাড়িতে ডেকে
আনতেন। এক পর্যায়ে ফাতেমার সাথে ইউনুছ আলীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে
উঠে।পিবিআইয়ের নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোঃমনিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে
জানান ইউনুছ ও ফাতেমার প্রেমের সর্ম্পকটি দুই বাড়িতেই জেনে যায়। এরই মধ্যে
ইউনুস বাড়ি পরিবর্তন করে বিশনন্দী ভেংলায় নতুন বাড়িতে চলে যায়। এরপর
ইউনুছকে বিয়ের জন্য বাড়ি থেকে পাত্রী খোঁজা শুরু করে।
কিন্তু গর্ভবতী হওয়ার আশঙ্কা এবং ইউনুছের জন্য কনে দেখার বিষয় জানতে পেরে
ফাতেমা ইউনুছকে বিয়ে করার জন্য ইউনুসকে চাপ দেয়। কিন্তু ইউনুছ রাজি ছিল
না। গত ১০ আগস্ট বিকালে ইউনুছ মোবাইল ফোনে ফাতেমাকে ডেকে নেন। বিভিন্ন
জায়গায় ঘুরে শেষে ইউনুছদের নতুন বাড়ির পিছনে গাছ-গাছালি বেস্টিত জায়গায়
ফাতেমাকে রেখে বাড়ি যায়। রাত ২টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে ফাতেমার কাছে
গিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে এবং একপর্যায়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে।
এরপর ওখানে স্থানীয় ডালিমের নির্মাণাধীন ঘরের বালু ভর্তি ভিটায় গর্ত করে
ফাতেমার লাশ পুতে দেয়। এর পরের দিন নির্মাণাধীন ঘরের মালিক ডালিমের মা
শরিফাকে জিজ্ঞাসা করেন কবে ভিটি পাকা করবে। যদি টাকা লাগে আমার কাছ থেকে
নিবেন।
এরপর গত ১৫ আগস্ট ডালিম ঘরের কাজ করার সময় ভিটি হতে দুর্গন্ধ পায় এবং
কোদাল দিয়ে বালু সরায়ে ভিকটিমের অর্ধপচা লাশ পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে
পুলিশ এসে লাশ মর্গে প্রেরণ করে এবং অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করে
তদন্ত শুরু করে।
পিবিআই উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গত ৮ অক্টোবর সিলেটের জৈন্তাপুর
থানার বাংলাদেশ ভারতের সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী অভিযান
চালিয়ে আসামি ইউনুছ আলীকে গ্রেফতার করে। এরপর আসামিকে নিয়ে ১০ ডিসেম্বর
অভিযান চালিয়ে ফাতেমার ব্যবহৃত মোবাইল সিম, জাতীয় পরিচয়পত্র, গলার হার,
কানের দুল, হাত ব্যাগ ও উড়না হাড়িদোয়া নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে
ইউনুছ।