সরকার ঘোষিত লকডাউনের কারণে দেশে
ছুটিতে আসা যেসব প্রবাসী (সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার ও
সিঙ্গাপুর) আটকা পড়েছেন তাদের কর্মস্থলে ফেরাতে শনিবার থেকে বিশেষ ফ্লাইট
পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে মন্ত্রী পর্যায়ের
জরুরি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার এ সিন্তান্ত গৃহীত হয়।
এ ৫টি দেশে গমনেচ্ছু প্রবাসী বাংলাদেশি
কর্মীদের মধ্যে যাদের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়
কর্তৃক ইস্যুকৃত বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স রয়েছে, তাদেরকে বিদেশ গমনে অগ্রাধিকার
দেয়া হবে। তবে এসব দেশের ক্ষেত্রে যাদের ভিজিট ভিসা আছে, কিন্তু বিএমইটি
ক্লিয়ারেন্স নেই, তারা বিদেশ গমনে অগ্রাধিকার পাবেন না।
ভিজিট ভিসা নিয়ে যেসব বাংলাদেশি কর্মের উদ্দেশ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত যাবেন, তারা বিএমইটি’র ছাড়পত্র নিয়ে যেতে পারবেন।
বিগত তিন দিন ধরে যেসব যাত্রী টিকেট কেনা
সত্ত্বেও লকডাউনের কারণে বিদেশ গমন করতে পারেননি, তাদেরকে বিমান বাংলাদেশ
এয়ারলাইন্স বা সংশ্লিষ্ট দেশসমুহের ন্যাশনাল ক্যারিয়ারের অতিরিক্ত বিশেষ
ফ্লাইটের মাধ্যমে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
যেসব যাত্রী ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম হতে ভ্রমণ
করার জন্য টিকেট ক্রয় করেছেন, তাদেরকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের
কানেকটিং ফ্লাইটের মাধ্যমে ঢাকায় আনা যাবে।
টিকেটের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য
যাত্রী পরিবহনের জন্য পরিচালিত বিশেষ ফ্লাইটের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং চার্জ
সাধারণ ফ্লাইটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য চার্জের সমপরিমাণ প্রদেয় হবে। স্বাস্থ্য
বিভাগ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিদেশগামী যাত্রীদের পিসিআর
টেস্ট নির্বিঘ্নে এবং স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে ফলাফল প্রদান
করবে।
লকডাউন চলাকালে উল্লিখিত ৫টি দেশ ছাড়া
অন্যান্য দেশে যারা জরুরি প্রয়োজনে যেতে ইচ্ছুক, তারা পররাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র সাপেক্ষে ট্রানজিট-প্যাসেঞ্জার হিসেবে বিশেষ ফ্লাইটে
ভ্রমণ করতে পারবেন।
এ ৫টি দেশে বা ট্রানজিট যাত্রীরা
এয়ারপোর্টে আসার পথে পাসপোর্ট/ভ্যালিড ভিসা/বিমানের টিকিট/বিএমইটি কার্ড
অথবা নিরাপত্তা এজেন্সি কর্তৃক ইস্যুকৃত পাস সঙ্গে রাখবেন। পুলিশ কর্তৃপক্ষ
বাংলাদেশের বিভিন্ন পয়েন্টে উল্লিখিত ডকুমেন্টধারীদের অভ্যন্তরীণ চলাচলে
যথাযথ সহযোগিতা প্রদান করবেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা জরুরি প্রয়োজনে ১৪
দিনের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের শর্তে দেশে আসতে পারবেন।
প্রত্যেক যাত্রীকে কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলকভাবে প্রদর্শন
করতে হবে।
বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমুহ দেশে
ফিরতে ইচ্ছুক প্রবাসী কর্মীদের তালিকা প্রস্তুত করবে। বিদেশ হতে ফেরত
যাত্রীদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোরেনটাইন নিশ্চিতের জন্য সশস্ত্র বাহিনী
বিভাগ দিয়াবাড়ি, চট্টগ্রাম ও সিলেটে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে রাখবে। ৫টি
দেশ থেকে যেসকল যাত্রী দেশে আসবেন, তারা বোর্ডিং এর আগেই কোয়ারান্টাইনের
জন্য নির্দিষ্ট হোটেলে বুকিং নিশ্চিত করবেন।
কাতার ও ওমানে ক্রমহ্রাসমান করোনা
সংক্রমণের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে নিষিদ্ধ দেশসমুহের তালিকা হতে উক্ত দেশ
দু’টিকে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলো দেশে
ফিরতে ইচ্ছুক প্রবাসী কর্মীদের লকডাউন চলাকালে দেশে আসার বিষয়ে নিরুৎসাহিত
করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
এক্ষেত্রে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম,
বাংলাদেশ মিশনের ওয়েব সাইট, নিউজ পোর্টাল ইত্যাদি ব্যবহার এবং কমিউনিটি
লিডারদের সহযোগিতা নেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার
কল্যাণ মন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী, বেসামরিক
বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট
মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংযুক্ত ছিলেন।