মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরগামী ফ্লাইট চলাচল নিয়ে অনেকটা দুশ্চিন্তার
মধ্যে পড়েছে এয়ারলাইনগুলো। কারণ ঢাকা থেকে কোনো ফ্লাইটেই তারা যাত্রী নিয়ে
যেতে পারছে না। তবে ওই দেশ থেকে ফিরতি ফ্লাইটে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় আসতে
পারছে।জানা যায়, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি ঢাকা থেকে
যাত্রী পরিবহনের অনুমতি না দেয়ায় এই দুই রুটে চলাচলকারী এয়ারলাইনগুলোকে
যাওয়ার সময় ‘ফেরি ফ্লাইট’ পরিচালনা করতে হচ্ছে। এতে এয়ারলাইনগুলো ওয়ানওয়ে
যাত্রী পরিবহন করতে গিয়ে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র
থেকে জানা গেছে।বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা
গতকাল বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট গত সপ্তাহ থেকে আবারো
শুরু হওয়ার পর মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে বিমান বাংলাদেশ এযারলাইন্স আগের মতোই
ফ্লাইট পরিচালনা করছে। তবে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
থেকে যেসব ফ্লাইট মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে নির্ধারিত দিনে ছেড়ে
যাচ্ছে, সেগুলোতে কোনো যাত্রী নেয়া হচ্ছে না। যাওয়ার সময় পাইলট আর কেবিন
ক্রু ফ্লাইট খালি নিয়ে যাচ্ছে। এটাকে এয়ারলাইন্সের ভাষায় ‘ফেরি ফ্লাইট’ বলা
হয়। কিন্তু মালয়েশিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে ওই ফ্লাইটটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে
একই দিনে দেশে ফিরে আসতে পারছে।
বর্তমানে ঢাকা থেকে সপ্তাহের শুক্রবার ও মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিমান
বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দু’টি ফ্লাইট ছেড়ে যাচ্ছে। ফিরতি ফ্লাইটে যাত্রী
নিয়ে ওই দিন দিবাগত ভোররাতেই আবার ঢাকায় ফিরে আসছে। অপর দিকে সিঙ্গাপুরে
সপ্তাহে ৪টি ফ্লাইট চলাচল করছে। একইভাবে বেসরকারি এয়ারলাইন্সও ঢাকা থেকে
ফ্লাইট চালাচ্ছে। গত ৪ মে থেকে বেসরকারি বিমান পরিবহন সংস্থা ইউএস-বাংলা
এয়ারলাইন্স ঢাকা-কুয়ালালামপুর-ঢাকা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরুর ঘোষণা দেয়।এ দিকে করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ, নেপালসহ চার দেশের নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার।স্থানীয়
গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে গতকাল ঢাকার সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে,
‘কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারী ছাড়া চার দেশের নাগরিকদের দেশটিতে প্রবেশ
করতে দেয়া হবে না।গতকাল বিকেলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস
মার্শাল এম মফিদুর রহমানের সাথে এ প্রসঙ্গে জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি
টেলিফোন ধরেননি। তবে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল
একজন কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি নাম না প্রকাশের শর্তে নয়া
দিগন্তকে বলেন, ‘গতকাল থেকে মালয়েশিয়ায় ফ্লাইট চালাতে একটু সমস্যা হচ্ছে
বলে শুনেছি। তবে এই বিষয়টার সাথে আমরা সম্পৃক্ত না। এটি ভালো বলতে পারবে
যেসব এয়ারলাইন্স এ রুটে ফ্লাইট চালাচ্ছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,
মালয়েশিয়ায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার কথা আমরা কিছু অনলাইনে জানতে পারছি। তবে
অনলাইনের ওপর ভিত্তি করলে তো হবে না। আমরাও জানবো। তবে এখন পর্যন্ত এ
সংক্রান্ত কোনো চিঠি আমাদের অথরিটির কাছে আসেনি বলে জানান ওই কর্মকর্তা গতকাল বিকেলে এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের
ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে
তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, তিনি মিটিংয়ে থাকায় কথা বলতে পারছেন না।বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জেনারেল ম্যানেজার
(জনসংযোগ) কামরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব
হয়নি। বিমানবন্দর সূত্র জানায়, ঢাকা-মালয়েশিয়া রুটে বর্তমানে বিমান
বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স, ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স ফ্লাইট
পরিচালনা করছে। তবে বাজেট এয়ারলাইন হিসেবে পরিচিত এয়ার এশিয়া ও মালিন্দ্য
এয়ারলাইন্স চলাচল করছে কি না তা জানা সম্ভব হয়নি।