জিয়ার নির্বাচন ছিল অবৈধ
১৯৭৮-এর জুনে জিয়ার নির্বাচন ছিল অবৈধ এবং অসাংবিধানিক
১৯৭৭ সালে ২রা অক্টোবর জিয়ার বিরুদ্ধে পরিচালিত অভ্যুত্থান ব্যর্থতায় পর্যবসিত হলে, জেনারেল জিয়া যেভাবে তার নিজের সৈন্যদের উপর ব্যাপক হারে বেপরোয়া হত্যাকান্ড চালান; এই উপমহাদেশের ইতিহাসে কোন জেনারেল এমনটি করেছেন বলে নজির নেই। (সুত্রঃ বাংলাদেশঃ রক্তের ঋণ- পৃষ্ঠাঃ ১৩২-৩৩)।
জিয়া সেই সময়ের ডেপুটি চীপ অব আর্মি স্টাফ জেনারেল এরশাদকে, ১৯৭৮ সালের এপ্রিল মাসে চীপ অব আমি স্টাফ হিসেবে নিয়োগ প্রদান করলেও তিনি ১৯৭৮ -এর ১লা ডিসেম্বর পর্যন্ত চীপ অব আর্মি স্টাফের দায়িত্বভার নিজ হাতে রেখে দিয়েছিলেন। ১৯৭৮ এর ১লা ডিসেম্বর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের উপস্থিতিতে জেনারেল এরশাদকে তার অফিসে ডেকে এনে হাতে লিখে ১৯৭৮ এর এপ্রিল মাসের তারিখ দিয়ে তাকে চীপ অব আর্মি স্টাফ নিয়োগের পত্র জারি করেন। আমাকে জানানো হয়েছিলো যে, কিছু সাংবিধানিক সমস্যা কাটানোর জন্যেই এই রকম ‘ব্যাক-ডেট’ দিয়ে কাজটা সমাধা করা হয়।
জিয়া তার নিজের প্রমোশনের ব্যাপারেও কয়েকবার সেই আদেশ সংশোধন করে সর্বশেষ ৯/৪/১৯৭৯ইং তারিখে ৭/৮ ডি-১/১৭৫-২৭০ নম্বর বিশিষ্ট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নিজেকে ২৯/৪/১৯৭৯ইং থেকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে উন্নীত করেন এবং ৯/৪/১৯৭৯ইং তারিখে আর একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ২৯/৪/১৯৭৮ইং থেকে লেঃ জেনারেল হিসেবে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এই দলিল থেকেও এটা প্রমাণিত হয় যে, ১৯৭৮-এর জুনে তার নির্বাচন ছিল অবৈধ এবং অসাংবিধানিক।
এই বৈধতা নিয়ে নির্বাচনের পূর্বে সেনাবাহিনীর একটা অংশ প্রশ্ন তুলে যে, জেনারেল জিয়া একই সঙ্গে সিইনসি, সিএমএলএ এবং সিএএস হিসেবে বহাল থেকে নির্বাচনে অংশ নিলে, তা সংবিধানের পরিপন্থী এবং তা আইন ও গণতন্ত্রের মূলনীতির বর খেলাপ বলে বিবেচিত হবে।
সুত্রঃ বাংলাদেশঃ রক্তের ঋণ- পৃষ্ঠাঃ ১৩৭-৩৮
আপনার মতামত লিখুন :
Leave a Reply
More News Of This Category