করোনার কারণে প্রায় ১৫ মাস ধরে বন্ধ আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সশরীরে
পাঠদান। একই কারণে বন্ধ আছে এর ১৮টি হলও। তবে করোনাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের
বিভিন্ন সুবিধা না নিয়েও সেগুলোর জন্য ফি দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এ নিয়ে
ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তারা।জানা গেছে, সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতি অবনতি না হওয়া সাপেক্ষে
বিভাগগুলোকে পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক
কাউন্সিল। এর আলোকে সম্প্রতি বিভিন্ন বিভাগ পরীক্ষা নেওয়ার রুটিন দিতে শুরু
করেছে। এজন্য শিক্ষার্থীদের অনেকে ক্যাম্পাসে ফিরে ভর্তি হচ্ছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘ এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সুবিধা ব্যবহার না
করেও ভর্তি হওয়ার জন্য সেসবের ফি দিতে হচ্ছে।
ভর্তি হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত ফি-র তালিকায় দেখা যায়, আবাসিক
হল ফি ছাড়া মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সর্বমোট নেওয়া হচ্ছে ৩
হাজার ৭১৫ টাকা, বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৪ হাজার ২৮৫ টাকা এবং বাণিজ্য বিভাগ
থেকে নেওয়া হচ্ছে ৪ হাজার ৮৫ টাকা। এর মধ্যে ‘পরিবহন ফি’ হিসেবে নেওয়া
হচ্ছে ১ হাজার ৮০ টাকা।হলভেদে দ্বৈতাবাসিক ও আবাসিক শিক্ষার্থীদের সিট ভাড়া বাবদ দিতে হচ্ছে
১৪৪ থেকে ৬০০ টাকা। এছাড়াও ইউনিয়ন (হল ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ)
ফি বাবদ ৬০ টাকা, খেলাধুলা ফি ৫০ টাকা, ছাত্র-ছাত্রী কল্যাণ ফি ২৫ টাকা,
হেলথ কার্ড ফি ৫০ টাকা ও গ্রন্থাগার উন্নয়ন বাবদ ১২৫ টাকা প্রভৃতি ফি দিতে
হচ্ছে।বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা। নামপ্রকাশ না করার শর্তে
এক শিক্ষার্থী বলেন, সারা বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সুবিধা ব্যবহার না
করলেও ফি দিতে হচ্ছে। করোনার এই এটা একেবারে মওকুফ না করলেও যৌক্তিকভ হারে
কমানো যেত। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় তা করেনি। প্রশাসন শিক্ষার্থীবান্ধব হলে
এনিয়ে তারা একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারতো।ব্যবহার না করেও কেন ফি দিতে হচ্ছে-এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য
অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বহু সময় বন্ধ ছিল। আগে
কখনই এ ধরনের প্রশ্ন আসেনি। এক বছরে বেশি সময় ধরে ক্লাস কার্যক্রম নেই,
মেডিকেল নেই, পরিবহন নেই, সেমিনার বা লাইব্রেরি নাই, ল্যাবরেটরি নেই।
এগুলোর ব্যবস্থাপনা সবটাই রাখতে হচ্ছে। তারপরও এগুলো নিয়ে ভাবতে হবে।পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ফি কমানো যায় কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি
বলেন, এটা নিয়ে আগাম বলার সুযোগ নেই। এগুলো প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থা। হুটহাট
করে ব্যবস্থা নিলে অনেক মৌলিক জায়গায় আঘাত হানতে পারে। বিষয়গুলোর গুণগত
মানের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তাই সুচিন্তিতভাবে এসব বিষয়ে
সিদ্ধান্ত নিতে হবে।