পুত্রবধূকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করলেন শ্বশুর
মোঃরনি আহমেদ রাজু ক্রাইম রিপোর্টার
সবচেয়ে বড় সম্পর্ক হল সন্তান ও পিতামাতার সম্পর্ক। সেই সম্পর্কে কোন রকমের দাগ থাকেগোটা বিশ্বজুড়ে এই নিষ্পাপ এবং হৃদয়ের সম্পর্কের অনেক উদাহরণ পাওয়া যায়।গুগলে খুঁজলেও দেখা যায় বাবা মা এবং ছেলের মধ্যে অনেক মর্মস্পর্শী সম্পর্কের গল্প।কথায় আছে ছেলের কাছে পিতা মাতা স্বর্গের সমান এবং এই ব্যাপার অমান্য করলে সন্তানকে হতে হয় পাপের ভাগীদার।
মোঃ রনি আহমেদ রাজু ক্রাইম রিপোর্টার
পরকীয়ায় জড়িয়ে অনৈতিক মেলামেশার পরও ক্ষান্ত হননি একই বাবার ঔরসজাত সন্তান দু‘ভাই-বোন। বিয়ে পর্যন্ত করেছেন তারা। ঘটনাটি জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলায় আর যবনিকা ঘটেছে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে।জানা গেছে, ক্ষেতলাল উপজেলার তারাকুল গ্রামে বসবাসকারি আব্দুর রশিদের ঔরসজাত সন্তান প্রথম স্ত্রীর ছেলে সিজু (৩৫) পেশায় ট্রাক ড্রাইভার এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর মেয়ে রাজিয়া সলতানা (২৬), দু‘ভাই-বোনের (অবশ্য সৎ) বিয়ের ঘটনা নিয়ে দেশ জুড়ে চাঞ্চল্য তৈরী হয়েছে।
পরকীয়ায় জড়িয়ে অনৈতিক মেলামেশা ও ভাই-বোনের বিয়ের সর্বশেষ কাহিনী ফাঁস হয়ে গেলে তাদের বিচারের দাবি উঠে। যাতে আর কেউ এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটাতে পারেন। আর এ বিয়ে বৈধ নয় বলে জানিয়েছেন দেশের র্শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলামা।পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা জানান, আব্দুর রশিদ প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে বসবাস করার সময় ছেলে সিজু জন্ম নেয়। পরে ওই বিয়ে বিচ্ছেদ হলে, আব্দুর রশিদ জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার তারাকুল গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের মেয়ে মাহমুদা খাতুনকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করে সংসার শুরু করে.সেই সংসারে জন্ম নেয় মেয়ে রাজিয়া সুলতানা। ছেলে সিজু ও মেয়ে রাজিয়াকে আব্দুর রশিদ উপযুক্ত বয়সে বিয়েও দেন। তাদের ঘরে ছেলে-মেয়েও রয়েছে। এরই মধ্যে সিজু ও রাজিয়া তাদের বাবার বাড়িতে আসা-যাওয়ার মাঝে গোপনে পরকীয়ায় সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।রাজিয়ার মামা আব্দুল হান্নান বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এর আগেও অনৈতিক মেলামেশার কারণে গ্রামবাসী তাদের আটক করে মারপিট দিয়ে ক্ষেতলাল থানায় সোপর্দ করে ছিল। সে সময় তারা দুজনেই এমন কাজে আর জড়াবেন না বলে মুচলেকা দেন। তারপরও এমন জঘন্য কর্মকান্ডে জড়িয়েছে ওরা।
বাবা আব্দুর রশিদ বলেন, নিজের জন্ম দেয়া সন্তানরা এমন কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়বে তা কোনো বাবা-মা সহ্য করতে পারবে না। এমন ঘটনা জানার পর থেকেই আমি আর বাইরে বের হতে পারছি না। এমন ঘটনা শোনার আগে আমার মৃত্যু কেন হলো না।আব্দুর রশিদ আরো জানান, এ ঘটনার পর তিনি ছেলে-মেয়ে দু‘জনকেই আইনগত ত্যাজ্য করেছেন।গত ১৫ অক্টোবর বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দানহাটা কাজী অফিসে পূর্বের স্বামীকে তালাক দিয়ে বিয়ে কাবিন ও কলেমা পড়ানো হয়েছে মর্মে নিশ্চিত হওয়া গেছে।রাজিয়ার আগের স্বামী জয়পুরহাট পৌর শহরের বিশ্বাসপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও জয়পুরহাট পৌরসভার অফিস সহায়ক মজনু হোসেন জানান, ২০০৬ সালে রাজিয়ার সঙ্গে আমার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। আমাদের নয় (৯) বছরের রিয়াদ হাসান ও সাত (৭) বছরের রাকিবুল হাসান নামে দুইটি ছেলে সন্তান আছে। তারা মাদরাসায় লেখাপড়া করে। ছয় মাস আগে আমি জানতে পারি আমার শ্বশুরের আগের স্ত্রীর মেজ ছেলে সিজুর সঙ্গে রাজিয়ার প্রেমের সম্পর্ক। এরই এক পর্যায়ে সে আমার বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়ি চলে গেলে আমার আত্মীয়-স্বজনদের মাঝেও বিষয়টি জানাজানি হয়এ নিয়ে ক্ষেতলাল থানায় আমার অনুপস্থিতিতে তারা এ প্রেমের সম্পর্ক রাখবে না বলে মুচলেকা দেয়। পরে সে সংসার করবে না বলে জানালে পারিবারিকভাবে চার মাস আগে আমাদের বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়। কিছুদিন পর রাজিয়া তার ভুল স্বীকার করে আবার নতুন করে সংসার করতে চাইলে ছেলেদের কথা চিন্তা করে আবার আমাদের বিয়ে হয়। বিয়ে করার কিছুদিন পর তার ভাইয়ের সঙ্গে গত ১৪ অক্টোবর পালিয়ে গেছে।আমি তার খোঁজ করতে করতে বগুড়ার শিবগঞ্জ ভাইয়ের পুকুর এলাকায় গিয়ে সেখানকার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে জানতে পারি সিজু তার বাবা আব্দুর রশিদের নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে হাশেম আলী করে নিকাহ্ বিবাহ করেছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা বলেন, ‘এ বিয়ে বৈধ নয়। যেকোনো বিবাহ রেজিস্ট্রি হলে সরকার ফি পাবে কিন্তু একই বাবার ছেলে-মেয়ের মধ্যে বিবাহ হলে সেটা বৈধ হবে না।শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আলমগীর কবির বলেন, এমন ঘটনা কখনো শুনিনি। তবে এ বিয়ে সামাজিক স্বীকৃতি পাওয়ার কথা নয়।