সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:০৪ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
রাস্তার কাজ না করে টাকা ভাগাভাগি( সওজ) ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে রূপগঞ্জে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে স্বজনদের সংবাদ সম্মেলন মাগুরা গোপালগ্রাম ইউনিয়ন কৃষকদলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এ্যাডভোকেট মিথুন রায় চৌধুরী পটুয়াখালী ভার্সিটির, পোস্টগ্রাজুয়েট স্ট্যাডিজ কমিটির সভা।। দুস্থ ও অসহায় মানুষের ভরসা যেন ঝর্ণা মান্নান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট সাপাহারে জোর পূর্বক লক্ষাধিক টাকার মাছ উত্তোলন পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায়, মসজিদের ইমামের গরু লুট।। দুমকি উপজেলায়, গরু লুঠ মামলার ২ আসামি আটক শ্রীনগর থানা থেকে যুবদল নেতাকে ছিনিয়ে নিলো বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নওগাঁর মান্দায় ভূমিহীন কৃষকদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ
Headline
Wellcome to our website...
/ ১ Time View
আপডেট : মঙ্গলবার, ৩১ আগস্ট, ২০২১, ৬:০৮ পূর্বাহ্ন

 

নারী উদ্যোক্তা এক দশকে বেড়েছে ১২৬ শতাংশ

সাইদ শাহীন

আগস্ট ২৭, ২০২১

দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে অন্যতম প্রভাবক খুচরা পাইকারি ব্যবসা। খাতের বার্ষিক মূল্যসংযোজন লাখ ২৯ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। দেড় দশক আগেও পুরুষেরই একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল ব্যবসায়। নারীদের অংশগ্রহণ ছিল দেড় শতাংশেরও নিচে। তবে পরিসংখ্যান পাল্টেছে। খুচরা পাইকারি ব্যবসায় এখন নারীদের অংশগ্রহণ শতাংশে পৌঁছেছে। এক দশকের ব্যবধানে নারী উদ্যোক্তা বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।মোট দেশজ উৎপাদনের বা জিডিপির হিসাবের ক্ষেত্রে ২১টি প্রধান খাতকে বিবেচনা করা হয়। এসব খাতের মধ্যে অন্যতম পাইকারি খুচরা ব্যবসাবাণিজ্য। খাতে উদ্যোক্তাদের শ্রেণী বিভাজন অবদান মূল্যায়নে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) হোলসেল অ্যান্ড রিটেইল ট্রেড সার্ভে২০২০ শীর্ষক জরিপ পরিচালনা করেছে। জরিপের সাময়িক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।বিবিএসের জরিপে সরকারের কোনো না কোনো মাধ্যমে নিবন্ধন রয়েছে এমন উদ্যোক্তাদের তথ্য শুধু অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ২০১৯২০ অর্থবছরে দেশে নিবন্ধিত খুচরা পাইকারি প্রতিষ্ঠান ছিল ২৫ লাখ ৪০ হাজার ৮৯৭টি। এসব প্রতিষ্ঠানে পুরুষ উদ্যোক্তা ছিলেন কোটি ৩৯ লাখ হাজার ৫৬৪ জন। আর নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা ২০ লাখ হাজার ১৮৯। তবে পুরুষের তুলনায় এখনো কম হলেও নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা এক দশকে ১২৬ শতাংশ বেড়েছে। ২০০৯১০ অর্থবছরে নারী উদ্যোক্তা ছিলেন ৮৯ হাজার ৮৪৮ জন। সংখ্যা ২০০২০৩ অর্থবছরে ছিল মাত্র ২১ হাজার ৮৬৭। অর্থাৎ দেড় দশকে নারী উদ্যোক্তা বেড়েছে ৮২৯ শতাংশ।২০১৭ সাল থেকেই অনলাইনভিত্তিক উদ্যোক্তা কার্যক্রম পরিচালনা করছে উইমেন অ্যান্ড কমার্স ফোরাম (উই) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের সদস্য সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১২ লাখ। তবে সংগঠনটিতে প্রায় চার লাখ নারী উদ্যোক্তা কমার্সের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। অনেকেই হয়তো বা সরকারের নিবন্ধন কাঠামোর মধ্যে নেই। কভিড১৯ মহামারীর মধ্যে ব্যবসা পরিচালনার মাধ্যমে এসব উদ্যোক্তা স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। গ্রাম পর্যায়ে উদ্যোক্তাদের পণ্য ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে উই। সম্পূর্ণ দেশীয় পণ্যকেন্দ্রিক উদ্যোক্তাদের প্লাটফর্ম এখন সারা দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও বাংলাদেশীদের কাছে জনপ্রিয়।কমার্সভিত্তিক নারী উদ্যোক্তাদের বর্তমান সম্ভাবনা চ্যালেঞ্জের বিষয়ে জানতে চাইলে উইয়ের সভাপতি নাসিমা আক্তার নিশা বণিক বার্তাকে বলেন, আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট, সুযোগসুবিধা পরিবারের প্রয়োজনেই প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করেই উদ্যোক্তা হচ্ছেন নারী। তবে কভিড১৯ মহামারী পরিস্থিতি নারীদের জন্য নতুনভাবে উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ তৈরি করেছে। তবে কমার্সভিত্তিক ব্যবসা পরিচালনার জন্য নারীরা বেশ প্রতিবন্ধকতার মধ্যে রয়েছেন। প্রথমত, ডেলিভারি সিস্টেম পরিবহন সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে নারীদের। গ্রাম উপজেলা পর্যায়ে দুটি ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করা সম্ভব হলে নারীদের আরো বেশি উদ্যোক্তা হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। পাশাপাশি ইন্টারনেট সুবিধা আরো সাশ্রয়ী ভোক্তাবান্ধব করা প্রয়োজন। অর্থায়ন সনদায়ন প্রক্রিয়ায় নারীরা যেন অংশগ্রহণ করতে পারেন সে ব্যবস্থাটা আরো সহজ করা দরকার। উই প্লাটফর্মে চার লাখের বেশি নারী উদ্যোক্তা থাকলেও ট্রেড লাইসেন্স অনেকেরই নেই। ফলে অনেক নারী উদ্যোক্তা সরকারের হিসাবের মধ্যে আসতে পারছেন না। এরা আবার সরকারের সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।বিবিএসের তথ্যমতে, খুচরা পাইকারি ব্যবসার মাধ্যমে মূল্যসংযোজন বাড়ছে। ২০০২০৩ অর্থবছরে যেখানে মাত্র ১৩ হাজার ৬২৭ কোটি টাকার মূল্যসংযোজন হয়েছিল, সেখানে ২০০৯১০ অর্থবছরে তা বেড়ে ৩৮ হাজার ৫৩০ কোটি এবং ২০১৯২০ অর্থবছরে লাখ ২৯ হাজার ৫২০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। ফলে খাতে নারীদের অবদান সর্বোচ্চ শতাংশ হিসাবে নিলেও তাদের মাধ্যমে অর্থনীতিতে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকার মূল্যসংযোজন হচ্ছে। এর মাধ্যমে নারীদের স্বাবলম্বিতা যেমন বাড়ছে তেমনি নারীর ক্ষমতায়ন এগিয়ে যাচ্ছেতবে নারীরা ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে এখনো বেশ প্রতিবন্ধকতার মধ্যে রয়েছেন। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নারীপুরুষ বৈষম্য নারীর সুনির্দিষ্ট প্রতিবন্ধকতাগুলো খুঁজে বের করতে গবেষণা পরিচালনা করেছে বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) চ্যালেঞ্জেস অব ট্রেডিং অ্যাক্রস বর্ডারস ফেসিং দ্য উইমেন ট্রেডারস অব বাংলাদেশ: রিসেন্ট ফাইন্ডিংস অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড শীর্ষক গবেষণায় বলা হয়েছে, আমদানি রফতানিসংক্রান্ত বিশেষ করে ঋণপত্র (এলসি), নগদ সুবিধা জিএসপি সনদ পেতে নবায়ন করতে পুরুষ উদ্যোক্তাদের তুলনায় নারী উদ্যোক্তাদের বেশি সময় অর্থ ব্যয় করতে হয়। নারীদের নানা প্রতিবন্ধকতা উত্তরণের বিষয়ে সংগঠনটি সুপারিশ করেছে। নারীদের জন্য ট্রেড বন্ড লাইসেন্স, এলসি খোলা নগদ সুবিধা পাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। এছাড়া নারীদের সক্ষমতা তৈরি, প্রচ্ছন্ন ব্যয় (হিডেন চার্জ) বন্ধ করা, লিড টাইম কমানো, ব্যাংকিং অর্থায়ন পেতে নারী উদ্যোক্তাদের গ্যারান্টরের সংখ্যা কমানো, নারীদের জন্য সক্রিয় হেল্প ডেস্ক চালু করতে হবে। সনদায়ন অর্থায়ন প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সহযোগিতামূলক আচরণ এইচএস কোডসংক্রান্ত সমস্যা দূর করতে হবে বিষয়ে উইমেন অন্ট্রাপ্রেনিউর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ওয়েব) সভাপতি নাসরিন ফাতেমা আউয়াল বণিক বার্তাকে বলেন, অর্থনীতিতে নারীর অবদান বাড়াতে হলে নারী শ্রমশক্তিকে অর্থনৈতিক বাণিজ্যিক কাজে নিয়োজনের পথ সুগম করতে হবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণকারী নারীদের জন্য সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থায় বিশেষ হেল্প ডেস্ক থাকলেও সেগুলোতে হালনাগাদ তথ্য তেমন পাওয়া যায় না। আর্থিক সুবিধার পাশাপাশি নারী উদ্যোক্তাদের পরিচালনগত অসুবিধাগুলো অপসারণ করতে হবে। কেননা ট্রেড লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে নারী উদ্যোক্তারা প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছেন। লাইসেন্স জটিলতার কারণে অনেক নারী ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য নারীদের ঋণ ট্রেড লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়াটি সহজ করা দরকার। নারীদের এলসি খোলা, নগদ সুবিধা সনদ পেতে নারী উদ্যোক্তাদের সাধারণত পুরুষের চেয়ে বেশি সময় ব্যয় করতে হয়। ধরনের বৈষম্যগুলো দূর করা প্রয়োজন। ব্যবসা শুরু থেকে বিপণনের সব পর্যায়ে প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি নীতিসহায়তা বাড়াতে হবে। দেশের নারী উদ্যোক্তাদের অধিকাংশই ক্ষুদ্র, ছোট মাঝারি। ফলে বাজেটে নারীদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা বাড়াতে হবে। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখা সেই অর্থ উদ্যোক্তাদের কাছে পৌঁছাতে হবে।বিবিএসের তথ্যমতে, পাইকারি খুচরা ব্যবসায় ২০০২০৩ অর্থবছরে মোট ১৫ লাখ ৭৪ হাজার ৩৩৪টি অর্থনৈতিক ইউনিট প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত ছিলেন ২১ লাখ ২৬ হাজার ১৭৭ জন নারী পুরুষ। ২০০৯১০ অর্থবছরে ২৬ লাখ ৫০ হাজার ১২৩টি প্রতিষ্ঠানে ৫২ লাখ ৬৪ হাজার ৯০০ জন ২০১৯২০ অর্থবছরে ২৫ লাখ ৪০ হাজার ৮৯৭টিতে নিয়োজিত ছিলেন কোটি ৪১ লাখ হাজার ৭৫৩ জন। নারী উদ্যোক্তাদের মূলত ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প হিসেবে কৃষি মৎস্য খাত ছাড়াও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত, পর্যটন, ফ্যাশন সৌন্দর্য পণ্য, স্বাস্থ্যবিষয়ক পণ্য এবং অনলাইন ব্যবসায় বেশি আগ্রহ রয়েছে। পাশাপাশি গার্মেন্ট অ্যাকসেসরিজ, বিউটি পার্লার, টেইলারিং, রিটেইল শপ, আইটি, ইলেকট্রনিকস, সফটওয়্যার, পাটজাত পণ্য হ্যান্ডিক্র্যাফটস খাতে নারী উদ্যোক্তা বাড়ছে। ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইনডো (এনএসডব্লিউ) চালু করলে নারীদের অনেক সমস্যা দূর হবে। ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া থেকে শুরু করে মালপত্র গন্তব্যে পৌঁছা পর্যন্ত প্রতিটি প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে নারীদের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি নারীদের অর্থায়ন বাধা দূর করতে হবে। বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংকগুলো অনেক বেশি আন্তরিক। ব্যাংকিং সিস্টেমের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তা তৈরি সম্প্রসারণের আরো সুযোগ রয়েছে। কিন্তু জামানত কিছু প্রাতিষ্ঠানিক নথিপত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে তারা পিছিয়ে থাকেন। ফলে ব্যাংক চাইলেও এক্ষেত্রে অর্থায়ন করতে পারে না। তবে ধরনের বাধা যত দূর সম্ভব দূর করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে নারীদের জন্যই শুধু শাখা চালু করা হয়েছে। ব্যাংকিং চ্যানেলে নারীদের অর্থায়নের জন্য নতুন নতুন ধারণা চালু করা হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page