শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:০৩ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
রাস্তার কাজ না করে টাকা ভাগাভাগি( সওজ) ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে রূপগঞ্জে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে স্বজনদের সংবাদ সম্মেলন মাগুরা গোপালগ্রাম ইউনিয়ন কৃষকদলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এ্যাডভোকেট মিথুন রায় চৌধুরী পটুয়াখালী ভার্সিটির, পোস্টগ্রাজুয়েট স্ট্যাডিজ কমিটির সভা।। দুস্থ ও অসহায় মানুষের ভরসা যেন ঝর্ণা মান্নান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট সাপাহারে জোর পূর্বক লক্ষাধিক টাকার মাছ উত্তোলন পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায়, মসজিদের ইমামের গরু লুট।। দুমকি উপজেলায়, গরু লুঠ মামলার ২ আসামি আটক শ্রীনগর থানা থেকে যুবদল নেতাকে ছিনিয়ে নিলো বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নওগাঁর মান্দায় ভূমিহীন কৃষকদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ
Headline
Wellcome to our website...
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই চলছে ইলিশ নিধনে জমজমাট বেচাকেনা!
/ ২ Time View
আপডেট : বুধবার, ২০ অক্টোবর, ২০২১, ৭:৩৬ অপরাহ্ন

নিষেধাজ্ঞা
অমান্য করেই চলছে ইলিশ নিধনে জমজমাট বেচাকেনা!

মোঃ রনি আহমেদ রাজু ক্রাইম রিপোর্টার

বুধবার (২০ অক্টোবর) বিকাল ৪টা। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার মোল্লারহাট
বাজারের সাপ্তাহিক হাটের দিন। চরাঞ্চলের মানুষের কেনাকাটায় হাট তখন জমে
উঠেছে। হাটের পূর্ব প্রান্তে ব্রহ্মপুত্রের কিনারে দাঁড়ালেই ওপারে ভারতীয়
সীমান্ত চোখে পড়ে। এপারে নদের ভাঙন তীব্র। নদের প্রবাহমান জলরাশিতে জাল
টেনে ডিঙি নৌকা ভিড়ছে কিনারে।কাছে গিয়ে নৌকায় নজর রাখতেই দেখা মিললো রূপালি
ইলিশ। আকারে ছোট ও পরিমাণে কম হলেও প্রত্যেক নৌকাতেই ইলিশ আছে। নৌকা ঘাটে
ভিড়তেই সাধারণ ক্রেতাদের এড়িয়ে মৌসুমী ব্যাপারীরা চটজলদি সেগুলো নিজেদের
দখলে নিয়ে নিলেন। তাদের কাছ থেকে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে স্থানীয়দের। নিম্ন
আয়ের মানুষরা কিনছেন ছোটগুলো।পূণ্যতোয়া ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় উলিপুর
উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন। ভাঙনে নাকাল এই ইউনিয়নের মানুষের মুখে ইলিশের
কথা। এই মাছ এবারও ব্রহ্মপুত্র নদের পানিকে গৌরবান্বিত করেছে। পরিমাণে
তুলনামূলক কম হলেও ইলিশের দেখা মিলছে জেলেদের জালে। বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের
মোল্লারহাট বাজার সকাল-সন্ধ্যা ইলিশে ভরপুর।

অপর্যাপ্ত অভিযান আর নজরদারির
অভাবে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই ব্রহ্মপুত্রে মা ইলিশ শিকার চলছে
হরদম।
স্থানীয়রা বলছেন, ম্যানেজ সংস্কৃতি চর্চায় দিন-রাত জেলে নৌকাগুলো ইলিশ
শিকার করছেন। সকাল আর সন্ধ্যায় তা প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে নদের কিনারে।
প্রজনন মৌসুমে ৪ অক্টোবর থেকে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশের নদ-নদীতে
ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। একই সময়ে দেশব্যাপী ইলিশ
আহরণ, বিপণন, পরিবহন, কেনাবেচা, বিনিময় ও মজুত নিষিদ্ধ। নিষেধাজ্ঞা
বাস্তবায়নে কুড়িগ্রামের পাঁচটি উপজেলা (জেলা সদর, নাগেশ্বরী, উলিপুর,
চিলমারী ও রাজীবপুর) ইলিশ জোনভুক্ত করা হয়েছে।রাতে নদীতে ইলিশ ধরে কারা
জেলেরা বলছেন, সারাদিন জাল টেনে আড়াই কেজি, কখনও ৫-৭ কেজি ইলিশ মেলে। তবে
বেশিরভাগই আকারে বেশ ছোট। ব্যাপারীরা সেসব মাছ চার থেকে পাঁচশ’ টাকা কেজি
দরে কিনে নেন। তবে রাতের নদে ইলিশের বিচরণ কিছুটা বেশি।স্থানীয় কয়েকজন যুবক
জানান, সারারাত জাল টেনে সূর্যোদয়ের পরপরই ইলিশ নিয়ে মোল্লারহাট বাজারে
ভেড়ে জেলে নৌকাগুলো। এ সময় বড় আকারের ইলিশ মেলে। তবে দিনে মেলে কম। বিকাল
হতেই জেলে নৌকা থেকে ইলিশ সংগ্রহ করে বাজারে তোলেন ব্যাপারীরা। রাত ৯টা
পর্যন্ত চলে কেনাবেচা। তবে রাতের ক্রেতাদের বেশিরভাগই শহরের আগন্তুক।
প্রতিদিন তিন থেকে চার মণ এমনকি তারও বেশি ইলিশ বিক্রি হয় মোল্লারহাটে। তবে
মৌসুমী ব্যাপারীদের দাপটে স্থানীয় স্বল্প আয়ের মানুষের চুলায় এসব ইলিশ ওঠে
না। সামর্থ্যবানরাই বেশি দামে কিনে নেন বলে জানান স্থানীয় যুবক এমদাদুল।
তার কথার সত্যতা মেলে নদের কিনারে, যেখানে জেলে নৌকাগুলো একে একে জড়ো হয়
সেখানে। নৌকা থেকে অল্প দামে ইলিশ সংগ্রহ করে কিনারে ঝুড়িতে মজুত করছেন
মৌসুমী ব্যাপারী রফিকুল। সেগুলো কেজি প্রতি দাম হাকাচ্ছেন সাড়ে ৮০০ টাকা।
রফিকুলের মতো ব্যাপারীদের স্বেচ্ছা নজর এড়িয়ে ছোট ছোট ইলিশগুলো হাটে বিক্রি
হচ্ছে তূলনমূলক কম দামে। এসব ইলিশ কিনছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
নিষেধাজ্ঞার মধ্যে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কীভাবে ইলিশ শিকার ও বিক্রি
করছেন—জানতে চাইলে রফিকুল বলেন, ‘হামরা (আমরা) পুলিশ পুষি। পুলিশ আইসে,
ঘুরি যায়।নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্থানীয়ভাবে আহরিত মাছের দাম এত বেশি কেন-
এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেমন দামে কিনি, তেমন দামেই বিক্রি করি।তবে
স্থানীয়দের অভিযোগ, রফিকুলের মতো কিছু মৌসুমী ব্যাপারী সিন্ডিকেট করে জেলে
নৌকা থেকে আগেভাগেই মাছ কিনে ক্রেতাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছেন।
জেলেরা পেটের দায়ে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকার করলেও
ব্যাপারীরা সেই মাছ বাজারজাত করে আরও বড় অপরাধ করছেন।সূর্যাস্তের পর দেখা
গেলো, মোল্লারহাটে ইলিশের বাজার তখনও বেশ জমজমাট। মোবাইল ফোনে খবর মিললো,
বাজারে মৎস্য বিভাগের অভিযান শুরু হয়েছে।উলিপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা
তারিফুর রহমান সরকার জানান, সোমবার সন্ধ্যার পর আমরা ওই বাজারে অভিযান
চালিয়ে প্রায় ২৫ কেজি ইলিশ জব্দ করেছি। অনেক বড় নদী হওয়ায় কিছু সীমাবদ্ধতা
রয়েছে। তারপরও আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি।জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও)
কালিপদ রায় জানান, মোল্লারহাটে এভাবে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে সেটা আমার জানা ছিল
না। এ ব্যাপারে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।পর্যাপ্ত বরাদ্দ, নৌযান আর
জনবল সংকটে অভিযান পরিচালনায় সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, নিজস্ব নৌযান ও
লজিস্টিক সাপোর্টের সংকটে পর্যাপ্ত অভিযান পরিচালনা সম্ভব হয় না। অভিযানের
নৌকা দেখলই জেলে নৌকাগুলো দ্রুত পালিয়ে যায়। দক্ষিণাঞ্চলের মতো দ্রুতগতির
নৌযান পেলে অভিযান পরিচালনায় আরও বেশি সফলতা পাওয়া যেত।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page