মধুপুরের ‘ছেওগাং’ জলমহাল দখল মুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন
মধুপুর প্রতিনিধি
মধুপুরের মির্জাবাড়ী ইউনিয়নের ‘ছেওগাং’ নামের জলমহালের লীজ বাতিল ও জনগণের জন্য উম্মুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চার গ্রামের বাসিন্দা ও মৎসজীবীরা মিলে এই মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, বংশাই নদের অবিচ্ছেদ্দ অংশ হলো ‘ছেওগাং’। এই অংশটিতে যুগ যুগ ধরে আম্বাড়ীয়া, মোল্লাবাড়ী, বিষ্ণাইপাল, দড়িহাসিলসহ আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা তাঁদের প্রয়োজনে ব্যবহার করে আসছেন। মৎস্যজীবীরা ওই বিল থেকে মাছ সংগ্রহ করে জীবীকা নির্বাহ করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী মিলে অ-মৎস্যজীবীদের নিয়ে ‘ছেওগাং ফিসারিজ’ নামে একটি সংগঠন করে সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে লীজ নেয়। লীজের বরাদ্দপত্র হাতে পেয়েই ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাকিম তার লোকজন নিয়ে প্রায় সাড়ে ২১ একরের বিশাল জলমহাল ‘ছেওগাং’ দখলে নেন। এরপর থেকে এলাকাবাসীকে গোসল ধোয়া, কাপড় কাঁচা, গরুর গোসল করানো, পাট পচানো, মাছ ধরা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়। স্থানীয়রা জলমহাল ব্যবহার করতে গেলে তাদেরকে ভয়ভীতি দেখানোসহ বিভিন্ন সময়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একাধিক মামলাও করেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে। এতে এলাকাবাসী তাদের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধন থেকে ‘ছেওগাং ফিসারী’র নামে জলমহালের লীজ বাতিল করে জনগণের জন্য উম্মুক্ত করার দাবি তোলেন।
মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন স্থানীয় বাসিন্দা মো. গোলাম মোস্তফা। এতে বক্তব্য রাখেন মির্জাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম, মো. লাল মিয়া, মোসা. শাহিদা বেগম, আব্দুল বাসেদ, আব্দুল কাদের আকন্দ, আব্দুল মজিদ প্রমূখ।
জনগণের দাবির মুখে মধুপুর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. তারিকুল ইসলাম, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ইসমাইল হোসেন, মির্জাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাদিকুল ইসলামসহ ভূমি অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্তরা উপস্থিত হয়ে আলোচনায় বসেন। তারা ছেওগাং এলাকা সরজমিনে পরিদর্শন করেন। পুরো বিষয়টি এবং এলাকাবাসীর দাবি প্রতিবেদন আকারে জেলা প্রশাসক বরাবরে পেশ করার প্রতিশ্রুতি দেন।