কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত
কুমিল্লা প্রতিনিধি
গত দুই নির্বাচনের টানা পরাজয়ের পর এবার রিফাতের ওপরই আস্থা রাখল আওয়ামী লীগ।
গণভবনে শুক্রবার বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দলের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একজন সদস্য বিষয়টি সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের আগের দুটি নির্বাচনে সুবিধা করতে পারেনি আওয়ামী লীগ। সদর আসনটি ২০০৯ সালে ক্ষমতাসীনরা দখল করতে পারলেও তিন বছর পর মহানগরের নির্বাচনে তাদের পরাজয় হয় ৩৫ হাজারেরও বেশি ভোটে।
২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হারে ১১ হাজারের কিছু বেশি ভোটে। অর্থাৎ পাঁচ বছরের মধ্যে ব্যবধান কমে আসে ২৪ হাজার।আর টানা ১০ বছর সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব পালনের আগে ২০০৫ সালের পৌরসভা নির্বাচনেও জয় পেয়েছিলেন বিএনপি নেতা কাজী মনিরুল হক সাক্কুই। তার টানা প্রায় দেড় যুগের নগর পরিচালনায় সাফল্য-ব্যর্থতার বিষয়টি সামনে আসছে। দীর্ঘ এই সময়ে যেসব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি, সে জন্য এবার প্রশ্নের মুখেও পড়তে হবে তাকে।শুক্রবার বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য আমীর হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরুল্লাহ, রমেশ চন্দ্র সেন, রাশিদুল হাসান, আব্দুর রাজ্জাক, ওবায়দুল কাদের, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, কর্নেল (অব.) ফারুক খান ও আবদুস সোবাহান গোলাপ।দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা বৈঠক শেষে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আরফানুল হক রিফাতকে যোগ্য হিসেবে নৌকা তুলে দেয় আওয়াম লীগ।কুমিল্লায় সিটি মেয়র হতে রিফাত ছাড়া আরও ১৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র তুলেছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন, গতবারের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা। তিনি সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য।
আছেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহাবুবুর রহমান রুবেল, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য মাসুদ পারভেজ খান ইমরান, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ওমর ফারুক, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্য এবং মহানগর আওয়ামী লীগ যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক আনিসুর রহমান মিঠু।আওয়ামী লীগের দপ্তর উপকমিটির সদস্য মোহাম্মদ শাহজাহান, মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক নূর-উর রহমান মাহমুদ তানিম, শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক কবিরুল ইসলাম শিকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শফিউর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য জাকির হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শ্যামল চন্দ্র ভট্টাচার্য্য, চট্টগ্রাম রাউজান স্কুল অ্যান্ড কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস কাজী ফারুক আহমেদ মনোনয়নপত্র নিয়েছিলেন।আগামী ১৫ জুনের এই ভোট বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রথম পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় দেশের দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নৌকা ও ধানের শীষের লড়াই হবে কি না, তা অনিশ্চিত এখনও। কারণ বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোটে না যাওয়ার ঘোষণা আছে বিএনপির।দলটি এ নির্বাচনের জন্য কোনো প্রার্থী ঘোষণা করবে কি না, এই অনিশ্চয়তার মধ্যে দুজন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র তুলেছেন।
তবে বিএনপি ভোটে না এলেও সেখানে আওয়ামী লীগ-বিএনপির পরোক্ষ লড়াই হবে এ কারণে যে, ক্ষমতাসীনদের প্রতিদ্বন্দ্বী দলের নেতারা স্বতন্ত্র পরিচয়ে হলেও ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও এভাবেই লড়াই হয়েছিল।
সারা দেশে ক্ষমতাসীন হিসেবে আওয়ামী লীগকেই পূরণ না হওয়া নাগরিক সুযোগ-সুবিধার জন্য প্রশ্নের জবাব দিতে হচ্ছে। এ দিক দিয়ে আওয়ামী লীগ বরং কুমিল্লায় নির্ভার থেকে ভোটে যাচ্ছে।কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকার প্রার্থী হলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত।
গত দুই নির্বাচনের টানা পরাজয়ের পর এবার রিফাতের ওপরই আস্থা রাখল আওয়ামী লীগ।