জয়পুরহাটে আমানতের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এনজিও’র বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ২৭/জুন,২২
জয়পুরহাটের কালাইয়ে একটিনাম সর্বস্ব এনজিও’র নামে বেশী লাভ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তিন কর্মকতার্র বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ তুলে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে ভুক্তভোগীরা।সোমবার দুপুরে জয়পুরহাট – বগুড়া মহাসড়কের সুড়াইল গ্রামের মোড় এলাকায় ভূক্তভোগীরা সবুজ বাংলা উন্নয়ন কর্ম সংস্থার সভাপতি যোবায়ের হোসেন, কোষাধ্যক্ষ আব্দুল কাদের ও সদস্য গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে এ মানববন্ধনও বিক্ষোভ করেন।
এসময় ভুক্তভোগী সামছুল আলম বলেন, আমি কালাই বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এশটি চায়ের দোকানে চা বিক্রি করি। সেই দোকনের লাভের টাকায় আমার সংসার চলে। জমানো তিন লাখ টাকা সবুজ বাংলা উন্নয়ন কর্মসংস্থা নামে এশটি এনজিও’র কর্মকর্তারা এসে আমাদের টাকা আমানত হিসেবে চায় এবং তা কয়েক মাস পর কিছু লাভে ফেরত দিবে বলে। আমি তাদেরকে তিন লাখ টাকা দিই। কিন্তু টাকা নেওয়ার কয়েক মাস পর ওই এনজিও’র কোষাধ্যক্ষ আব্দুল কাদের,সভাপতি যোবায়ের হোসেন এবং সদস্য গোলাম রব্বানীর নিকট গিয়ে আমাদের টাকা চাইলে তারা তালবাহানা কওে আর টাকা ফেরত দেই না। এমনকি আমার বিরুদ্ধে মামলা দিবে বলে ও হুমকি দিচ্ছে।
রুহেল ইসলাম নামের আরেক ভুক্তভোগী বলেন, আমি ওই এনজিও থেকে দশ হাজার টাকা ঋণ নেই এবং ঋণ নেওয়ার সময় এশটি ফাঁকা ব্যাংকের চেক দিই। পওে আমি সাত হাজার টাকা পরিশোধ করার পর জানতে পারি আমার বিরুদ্ধে ওই চেকের বিপরীতে দুই লাখ টাকার মামলা করা হয়েছে। আমি এখন নিরুপায়।
সুড়াইল গ্রামের ভূক্তভোগী টপি আক্তার বলেন, আমার স্বামী একজন ভ্যানচালক। আর আমি অন্যও বাড়ীতে ঝি এর কাজ করি। কয়েক বছর ধওে আমরা স্বামী-স্ত্রী মিলে বাড়ীতে প্রায় তিন লাখ টাকা জমিয়ে ছিলাম। সেই টাকা সবুজ বাংলা উন্নয়ন কর্ম সংস্থার কোষাধ্যক্ষ আব্দুল কাদের বেশী লাভ দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যায়। লাভ দেওয়াতো দুরের কথা, এখন আসল টাকা নিতে গেলেই মামলা-হামলার ভয় দেখাচ্ছে।
সুড়াইল গ্রামের ব্যবসায়ী আলহাজ আব্দুল মান্নান সাকিদার বলেন, আমার গ্রামের ২০ থেকে ২২ জন ভুক্ত ভোগী প্রায় ৩০ লাখ টাকা ওই এনজিওতে কিছ ুলাভের আসায় জমা রেখেছে। কিন্তু এখন টাকা চাইতে গেলে উল্টো এনজিও’র কর্মকর্তারা তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিবে বলে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে।
আরও কয়েকজন ভুক্তভোগী বলেন, ওই এনজিও’র কোষাধ্যক্ষ আব্দুল কাদের, সভাপতি যোবায়ের ও সদস্য গোলাম রব্বানী আমাদের বলে আপনারা আমাদের এনজিওতে টাকা রাখেন। আমরা ব্যাংকের চেয়ে লাভ বেশি দেব এবং ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া ও বিবাহের সময় আর্থিক সুবিধা দেব। এসব কথা বলার পর আমরা তাদেরকে টাকা দিই। এসব সুবিধাতো দুরের কথা, আমাদের আসল টাকা ফেরত চাইতে গেলে টাকা নাদিয়ে উল্টো আমাদের দাদন ব্যবসায়ী বলে মামলা-হামলার ভয় দেখাচ্ছে এবং বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। আমরা ভুক্তভোগীরা এখন নিরুপায়। আমানতের অর্থ ফেরৎ দেওয়াসহ ওই এনজিও’র ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীও জানান তারা।
সমিতির কোষাধ্য আব্দুল কাদের বলেন, আমাদের নিকট থেকে আমানতের টাকা ফেরত নিতে হলে এনজিও বরাবর চারমাস পূর্বে আবেদন করতে হবে। তাহলে আমরা এনজিও কতর্ৃপক্ষ টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা নিবো। আজ যারা মানববন্ধন করেছে তাদের মধ্যে ৪জন ব্যক্তি মাত্র ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা পাবে। অথচ তারা সবাই মিলে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।