ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জনপদ
পটুয়াখালী প্রতিনিধি।।
দেশজুড়ে জেঁকে বসেছে ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীত। দক্ষিণবঙ্গ পটুয়াখালীর জেলায় ঘন
কুয়াশায় রোদের দেখা পাওয়া যা”েছ না। ফলে দিন ও রাতে প্রায় একই রকম শীত পড়ছে।
জনজীবন তীব্র শীতে দুর্ভোগে পড়েছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। এ বছর শীতের
কারণে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ ঘর থেকে কম বের হ”েছন। ইতিমধ্য শ্রমজীবী মানুষের
রুজি রোজগার ও আয় অনেকটাই কমেছে। সেই সাথে পটুয়াখালী জেলা হাসপাতালে
শিশু ও প্রবীণ রোগীর ভিড় ক্রমাসি বাড়ছে।
পটুয়াখালী জেলার আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এই তীব্র শীত আরও দুই তিন দিন থাকতে
পারে। এবং আরো জানান চলতি মাসের ১৭ থেকে ১৯ জানুয়ারি আকাশ মেঘলা থাকবে
সেই সাথে হতে পারে বৃষ্টি । বৃষ্টির পর আবার তীব্র শীতের প্রভাব থাকতে পারে। মাসের
বাকি সময় থাকতে পারে তীব্র শীত। এ সময়ে দেশের দক্ষিণবঙ্গে বয়ে যেতে পারে
শৈত্যপ্রবাহ আবহাওয়া ।
গত তিন দিন ধরে শীতের প্রকোপ অনেকটাই বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে
ছিন্নমূল মানুষ। তীব্র শীত আর একটানা ঘন কুয়াশার কারণে পটুয়াাখালীতে
অনেকাংশ মানুষ জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তুষারা”ছন্ন বাতাস আর ঘন
কুয়াশায়সহ হাড় কাপাঁনো শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে এ জেলার মানুষ । তবে এরই মধ্য
শিশু ও বৃদ্ধরা ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন কারণে রোগে আক্রান্ত হ”েছন। এতে সর্দি, কাশি ও
হাপানিজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। দিন মজুর পরিবারের মধ্য বয়সী ও বৃদ্ধরা
কর্মহীন হয়ে পড়েছে। পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ঘুরে দেখা যায়, জেলার
বাউফল, দশমিনা, দুমকি, মির্জাগঞ্জ, গলাচিপা, কলাপাড়া ও পটুয়াখালী সদর উপজেলা
জুড়ে নেমে এসেছে উত্তর পশ্চিমের কনকনে বাতাস শৈত্যপ্রবাহ। তীব্র শীত আর
একটানা ঘন কুয়াশার কারণে জেলা ও উপজেলা গুলোর জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। একই
সঙ্গে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জনপদ। ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহন গুলো দুপুর
পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল
করতে দেখা গেছে। শীতের প্রকোপে অভাব মানুষের জীবন বাঁচানোই দায় হয়ে পড়েছে।
দশমিনা উপজেলার বাঁিশবাড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিন দাসপাড়া গ্রামের সামছুল হক,
মজিদ হাওলাদার, সংকর চন্দ্র ও ইউনুছ তালুকদার বলেন, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ ।
প্রতিদিন কাজ না করলে আমাদের সংসার চলে না। কয়েকদিন যাবৎ অতিরিক্ত ঘন কুয়াশা ও
প্রচুর ঠান্ডা বাতাসের কারণে আমরা কাজে যেতে পারছি না। সরকারের পক্ষ থেকেও অঞ্চলের
মানুষেরা কোনো সহযোগিতা পা”িছনা।
পটুয়াখালী সদর হাসপাতালের কর্মরত একাধিক চিকিৎসক জানায়, তীব্র শীতের কারণে
সর্দি, কাশি ও হাপানিজনিত রোগের রোগী বেশি দেখা দিয়েছে সেই সাথে
সার্বক্ষণিক আমাদের উন্নত চিকিৎসা সেবা চলমান রয়েছে। ###
দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন
পটুয়াখালীতে লেপ তোষক তৈরির কারিগর
পটুয়াখালী প্রতিনিধি।।
কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে ভোরের সকাল। সন্ধ্যা নামলেই অনুভ‚ত হ”েছ শীত। রাতে ঝরছে
কুয়াশা। গত কয়েক দিনে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। পাতলা কাঁথার মানছে না শীত। তাই
হিমেল ঠান্ডা থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজন লেপের উষ্ণতার। শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে
মানুষ ভিড় জমা”েছ লেপ তোষক তৈরির বেডিং স্টোরগুলোতে। এরই সঙ্গে ব্যস্ততা বেড়েছে
পটুয়াখালী জেলার আটটি উপজেলা ও চারটি উপজেলার লেপ তোষক তৈরির কারিগর ও
ব্যবসায়ীদের। পটুয়াখালী জেলা শহরে প্রায় দুই শতাধিক লেপ-তোষক তৈরির দোকানে
এখন দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন।
তীব্র শীতকে কেন্দ্র্র করে দোকানগুলোতে লেপ-তোষক বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ। এছাড়া
ভ্রাম্যমাণ লেপ-তোশক ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও বেড়েছে উপজেলার সাত ইউনিয়নের
গ্রাম-গঞ্জসহ হাট-বাজার ও রাস্তা ঘাটে।
হিমেল শীতের পরশ থেকে উষ্ণতা পেতে কেউ পুরোনো লেপ-তোষক, বালিশ ঠিকঠাক করছে।
আবার কেউ নতুন তৈরি করার অর্ডার দি”েছন। অন্যদিকে অনেকে উঠিয়ে রাখা লেপ-
তোষক বের করে রোদে শুকিয়ে ব্যবহারের উপযোগী করার চেষ্টা করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে বাজারে শিমুল তুলা প্রতি কেজি ৪৬০ থেকে ৬২০
টাকা, কার্পাস তুলা প্রতি কেজি ৩১০ থেকে ৩৬০ টাকা, প্রতি কেজি কালো হুল ৮৫
থেকে ৯০ টাকা, কালো রাবিশ তুলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, সাদা তুলা ১১০ টাকা থেকে
১৩০ টাকা করে দামে বিক্রি হ”েছ। গত বছরের তুলনায় তুলার দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে
কাপড়ের প্রতি গজে ১০ থেকে ১৫ টাকা দাম বেড়েছে। প্রতিপিস লেপ- তোষক তৈরিতে
খরচ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেড়েছে। মাঝারি ধরনের একটি লেপ বানাতে খরচ হ”েছ ১২০০
থেকে দুই হাজার টাকা। তোষক বানাতে ১৫০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হয়। তবে
বিভিন্ন রকমের দামী-কমদামী তুলার প্রকারভেদে লেপ-তোষকের দাম কম-বেশি হয়ে
থাকে।###
সঞ্জয় ব্যানার্জী
পটুয়াখালী প্রতিনিধি