শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:০৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
রাস্তার কাজ না করে টাকা ভাগাভাগি( সওজ) ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে রূপগঞ্জে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে স্বজনদের সংবাদ সম্মেলন মাগুরা গোপালগ্রাম ইউনিয়ন কৃষকদলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এ্যাডভোকেট মিথুন রায় চৌধুরী পটুয়াখালী ভার্সিটির, পোস্টগ্রাজুয়েট স্ট্যাডিজ কমিটির সভা।। দুস্থ ও অসহায় মানুষের ভরসা যেন ঝর্ণা মান্নান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট সাপাহারে জোর পূর্বক লক্ষাধিক টাকার মাছ উত্তোলন পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায়, মসজিদের ইমামের গরু লুট।। দুমকি উপজেলায়, গরু লুঠ মামলার ২ আসামি আটক শ্রীনগর থানা থেকে যুবদল নেতাকে ছিনিয়ে নিলো বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নওগাঁর মান্দায় ভূমিহীন কৃষকদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ
Headline
Wellcome to our website...
পটুয়াখালীতে ভূতুড়ে কৃষিঋণের ফাঁদে ১২টি পরিবার
/ ৩ Time View
আপডেট : শনিবার, ২৯ জুন, ২০২৪, ৭:৪৪ পূর্বাহ্ন
পটুয়াখালীতে ভূতুড়ে কৃষিঋণের ফাঁদে ১২টি পরিবার
সঞ্জয় ব্যানার্জী, পটুয়াখালী প্রতিনিধি।। 
স্বাধীনতার
আগে মারা যাওয়া পাঁচজনসহ মোট ৬জন মৃতকে ঋণ দিয়েছে ব্যাংক। মৃত ব্যক্তিদের
নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে ২০১৪-১৫ সালে ব্যাংক থেকে বিভিন্ন অংকের ঋণ
উত্তোলন করা হয়েছে আবার কারও কারও নামে রয়েছে একাধিক ঋণ। পটুয়াখালীর বাউফল
উপজেলায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের কেশবপুর শাখায় এমন ঘটনা ঘটেছে। ঋণ
গ্রহীতা ব্যক্তিদের সকলের বাড়ি উপজেলার সূর্য্যমনি ইউনিয়নের কালিকাপুর
গ্রামে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ও তাঁদের স্বজনেরা কৃষি ব্যাংকের কেশবপুর
শাখায় যোগাযোগ করলে কতৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করছেন বলে জানা গেছে।

ব্যাংক
ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৪ সালের ১১ডিসেম্বর কৃষি
ব্যাংকের কেশবপুর শাখার কার্যক্রম শুরু হয়। ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী,
বাউফলের সূর্য্যমনি ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের কেতাব উদ্দিন হাওলাদারের
তিন ছেলে জবেদ আলী, হযরত আলী ও রহম আলী ২০১৪ সালে ওই শাখা থেকে কৃষিঋণ
নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে জবেদ আলীর নামে ২৫ ও ৩০ হাজার টাকার দুটি, হযরত
আলীর নামে ৪৫ হাজার ও রহম আলীর নামে ৫০ হাজার টাকার ঋণ নেওয়ার কথা বলা
হয়েছে। কিন্তু জবেদ আলী ১৯৬০, হযরত আলী ১৯৬৫ ও রহম আলী ১৯৬৬ সালে মারা
যান।
জবেদ আলীর ছেলের ঘরের নাতনি মোমেলা বেগম বলেন, তিনি তাঁর দাদাকে দেখেননি। ২০১৪ সালে দাদার নামে ঋণ নেয়া হয়েছে তাও তাঁরা জানেন না।
হযরত
আলী হাওলাদারের ছেলের ঘরের নাতি মো. ফকরুল ইসলাম(৫৭)  বলেন, আমার তিন
দাদার নামে লোন। আমি জন্মের পরে তাদের দেখি নাই। ২০২০ সালে ব্যাংক থেকে
নোটিশ আসার পরে আমরা লোন সম্পর্কে অবহিত হই। এরপর বারবার কৃষি ব্যাংকে
যোগাযোগ করে প্রতিকার চাইলেও ম্যানেজাররা কোন প্রতিকার করে নাই।
কালিকাপুর
গ্রামের আহম্মদ আলী হাওলাদারের ছেলে মো. জয়নাল হাওলাদার মারা যান ১৯৬৯
সালে। তাঁর নামে ২০১৪ সালে ৪০ হাজার টাকার কৃষিঋণ তোলা হয়েছে। জয়নালের
ছেলে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য মো. আবুল বাশার (৬৪) বলেন, তাঁর বাবার
মৃত্যুর সময় ব্যাংকের শাখাই ছিল না। ঋণ পরিশোধের নোটিশ পেয়ে জানতে পারেন,
বাবার নামে ২০১৪ সালে ঋণ তোলা হয়েছে।
অপর ঋণ
গ্রহীতা জয়নাল আবেদীন হাওলাদারের ছেলে আসাল উদ্দিন হাওলাদার (৮০) হেসে
হেসে  বলেন, আমার বাবা মারা গেছেন ৭০/৮০ বছর আগে আমার বয়সও ৮০ বছর। সেই
বাবার নামে একটা লোন, এই লোন তো আমরা নিই নাই, লোন সম্পর্কে কিছু জানি না।
একি আজব ঘটনা।
কালিকাপুর গ্রামের মো. বাবুল মৃধা (৪৪)
ঢাকায় থাকেন। তিনি কোনো দিন কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ নেননি। তাঁর নামে
কেশবপুর শাখা থেকে ২০১৪ সালে ১৭ হাজার ঋণ উত্তোলন করা হয়েছে। তাঁর ছোট ভাই
ফারুক হোসেন মৃধার (৪২) নামে ৭৫ ও ১৭ হাজার টাকার দুটি ঋণ উত্তোলন করা
হয়েছে।
আবদুল করিম মৃধা নামের এক ব্যক্তির নামে ৩৫
হাজার টাকার ঋণ উত্তোলন দেখানো হয়েছে। গ্রাম কালিকাপুর উল্লেখ করা হলেও
তাঁর বাবার নাম উল্লেখ করা হয়েছে রুস্তম আলী মৃধা। অথচ এ নামের কাউকে
কালিকাপুর গ্রামে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অপরদিকে একই
এলাকার মৃত আব্দুল ছত্তার মৃধার ছেলে বাবুল মৃধার নামে রয়েছে ১৭ হাজার
টাকার ঋণ। বাবুল মৃধার স্ত্রী হামিদা বেগম  জানান, তার স্বামী কৃষি ব্যাংক
থেকে কোন ঋণ গ্রহন করেননি। তবে ঋণের জন্য আবেদন করেছিলেন। তারপর একদিন ঋণ
পাশ হয়েছে জেনে ব্যাংকে গেলে ব্যাংক থেকে জানানো হয় আজকে টাকা পাবেন না।
এরপর আর কখনো কৃষি ব্যাংকে যাননি এবং কোন টাকা নেননি।
২০১৪
সালে কেশবপুর শাখার মাঠ কর্মকর্তা ছিলেন মো. শফিউর রহমান। পাঁচ বছর আগে
তিনি অবসরে চলে গেছেন। তাঁর দাবি, তিনি কোনো মৃত ব্যক্তি কিংবা নামে-বেনামে
কারও ঠিকানা ব্যবহার করে ঋণ দেওয়ার সুপারিশ করেননি।
এপ্রসঙ্গে
উপজেলার সূর্য্যমনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন বাচ্চু 
বলেন, যাদের নামে লোন নেয়া হয়েছে বলে জেনেছি তারা ৫০/৬০/৭০ বছর আগে মারা
গেছেন। একটা চক্র এই কাজ করছে জানিয়ে লোন নেয়ার ঘটনাকে তিনি মিথ্যা,
বানোয়াট ও ষড়যন্ত্র মূলক বলে মনে করেন।
কৃষি
ব্যাংকের কেশবপুর শাখার বর্তমান ব্যবস্থাপক হুসাইন মো. তাইফ আলম জানান, গত
সপ্তাহে (মঙ্গলবার)  ৪/৫জন লোক এসে তাঁকে বিষয়টি জানান। তাঁরা ২০২০ সালে
ঋণ পরিশোধের নোটিশ পেয়েছেন। এরপর খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ঋণগুলো ২০১৪-১৫
সালে অনুমোদন করা হয়েছে। এরপর তিনি উর্ধতন কতৃপক্ষকে জানালে তাঁরা বিষয়টি
খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখছেন এবং বিষয়টি এখন তদন্তাধীন রয়েছে। 

বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি ব্যাংকের বিভাগীয় মহা ব্যবস্থাপক গোলাম মাহবুব
বলেন, মৃত ব্যক্তির নামে লোন মঞ্জুর হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তদন্ত কমিটি গঠন
করে দিয়েছি, তদন্ত রিপোর্ট পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page