সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর-রুনি হত্যার গোপন তথ্য ফাঁস
মো:রনি আহমেদ রাজু ক্রাইম রিপোর্টার:
ক্ষমতায় এসেই ভারতকে চুরি করে গ্যাস দেন শেখ হাসিনা। আর সেই তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে প্রতিবেদন তৈরি করায় হত্যা করা হয় সাংবাদিক সাগর-রুনিকে
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিকে ২০১২ সালে যখন হত্যা করা হয় তখন একজন সংবাদ কর্মী হিসেবে পরিবাগে আলোর মিছিলের অফিসের পাশেই অন্য একটি অনলাইন পোর্টালে কাজ করতাম।
সংবাদ মাধ্যম বিশেষ করে অনলাইন পোর্টাল গুলোতে আলাদা আলাদা বিট থাকে, কেউ রাজনীতি বিট, কেউ খেলাধূলা,কেউ বিনোদন সহ আলাদা আলাদা বিটের নিউজ কাভার করে। আমার কাজ ছিল অনুসন্ধানী টাইপ, পুরাতন যে সকল স্পর্শ কাতর বিষয় নিয়ে সংবাদ গুলোর ফলোয়াপ নিউজ গুলো কেনো বন্ধ হয়ে গেছে সেই বিষয়গুলো উপর প্রতিবেদন তৈরি করা। যার পরিপেক্ষিতে দেখা যেত সপ্তাহ্ দশ দিনে হয়তো একটা প্রতিবেদন করা হতো। কখনও কখনও একটা প্রতিবেদনের পিছনে মাসও পার হয়ে যেত।
দেশ বিরোধী রামপাল চুক্তি বাতিলের আন্দোলন সহ সামু ব্লগ সহ বিভিন্ন যায়গায় হাসিনা বিরোধী আন্দোলনের সাথে জড়িত থাকার কারনে আমার তৈরি করা প্রতিবেদন গুলো স্বনামে কখনই পাবলিশ করা হতোনা। পোর্টালের মালিক “ঐ দেখা যায় তাল গাছ” ছড়ার লেখক খাঁন মুহাম্মদ মঈনুদ্দিন এর নাতি মুরসালিন ভাই আমাকে সেফ রাখতে এই বিষয়টা খুব কেয়ারফুলি করতেন। যদিও একটা সময় আর হাসিনার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তাঁর পক্ষে পোর্টালটা চালু রাখা সম্ভব হয় নাই। নিজের বিষয়ে সামন্য এই ঢোলটা পেটানোর কারন হলো, লেখাটা পোষ্ট করার পর অনেকে প্রশ্ন করবে কৃষক এই সব বিষয় কিভাবে জানলো? তাদের প্রশ্নের উত্তর হিসেবে এই ঢোলটুকু পেটানো। বলছিলাম সাগর-রুনি হত্যা নিয়ে। রুনি ছিলেন এটিএন বাংলার জ্বালানি বিটের সাংবাদিক, হাসিনা ক্ষমতায় এসে কুইক রেন্টালের নামে নতুন নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির অনুমোদন দিতে থাকে, ফার্নেসওয়েল জ্বালানি ব্যবহার করে ব্যয় বহুল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি হতে থাকে ব্যাঙের ছাতার মত। এই কইক রেন্টাল নামক দূর্নীতি মহা উৎসবের নেতৃত্বে থাকে হাসিনার মন্ত্রী কর্নেল ফারুক খানের ভাই আজিজ খাঁনের সামিট গ্রুপ। রুনি যে ভিডিও প্রতিবেদন করেছিল, সেই ভিডিওতে একটা সুড়ঙ্গ দেখা যায়, সেই সুড়ঙ্গপথ দিয়ে রুনি হেঁটে যাচ্ছে বিশাল একটা পাইল লাইন ধরে। আর সেই পাইপ লাইনটা সামিটের ফার্নেসওয়েলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে গ্যাস সরবাহের কাজে ব্যবহৃত হতো, বিদ্যুৎ তৈরি হতো তিতাস থেকে পাওয়া গ্যাসে, সামিটকে হাসিনা বিল দিত ফার্নেসওয়েল থেকে তৈরি বিদ্যুৎ এর উচ্চ মূল্য। আর সেই ভিডিওর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর যে তথ্যটি ছিল, তাহলো সেই সুড়ঙ্গ পথে সেই সময়ে ভারতের দিকেও পাইপ লাইন ছিল। সেই পাইপ লাইন দিয়ে ভারতেও গ্যাস পাচার করতো, ভারতে আনুষ্ঠানিক ভাবে কাগজে কলমে গ্যাস দেয়ার বহু বছর আগে থেকেই হাসিনা গ্যাস দেয়া শুরু করে। ঘোড়ারশাল সার কারখনায় গ্যাস সরবারহ করা হতো, সেখান থেকে গ্যাস যেত সামিটের তেল ভিত্তিক বিদুৎ কেন্দ্রে। পরিবাগে সাকুরা বারে অনেকেই আসত, কর্মস্থলের সাথেই এই বার থাকায় অনেকেই অফিসে আসত, যদ্দুর মনে পড়ে, ১২ সালে সাগর-রুনি হত্যার সম্ভবত ২০/২৫ দিন পর এক সন্ধ্যায় পোর্টালের মালিক মুরসালিন ভাই কল দিয়ে বলল, ভাই আপনি কোথায়? অফিসে আছি বলায় উনি বলেলন সাকুরায় ঢুকে হাতের বাম দিকে শেষ কর্নারের টেবিলে আসেন, সাকুরায় ঢুকে নির্দিষ্ট টেবিলে গিয়ে দেখি অপরিচিত এক ছোলে, বয়স সম্ভবত ২৬/২৭ হবে, হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল, আমি অনিল, মুরসালিন ভাই থেকে আপনার কথা শুনছি, আপনাকে একটা ভিডিও দেখতে আসছি বলে, তার সাথে থাকা ল্যাপটপটা খুলে একটা ভিডিও চালু করে, রুনির করা সেই ভিডিও প্রতিবেদনটা দেখে মাথা চক্কর দিয়ে উঠে। ভিডিওটা দেখা শেষ হবার পর অনিল বলল, ভাই এখানে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটা নাই। বাকি অংশগুলো আরো পাঁচজনের কাছে। আমি সবগুলো এক করে আপনাকে দিব। অনিলের সাথে সাক্ষাৎ ও আলোচনার চার পাঁচদিন পার হয়ে যাবার পরেও তার পক্ষ থেকে কোন যোগাযোগ না দেখে মুরসালিন ভাই অনিলের সাথে কন্ট্রাক করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হন, তারপর আর কখনই তার খোজ পাওয়া যায় নাই। পরে মুরসালিন ভাই একটি সূত্র থেকে জানতে পারেন রেললাইনের বেওয়ারিশ যে দুটি লাশ আঞ্জুমান দাফন করে সেখানে নাকি একজন ছিল অনিল। সত্য মিথ্যা যাচাই করার কোন সুযোগ আমার বা মুরসালিন ভাইয়ে হাতে না থাকায় আর বিষয়টা এগিয়ে নেয়া সম্ভব হয় নাই। পরবর্তীতে জানতে পারি সে সময়ে সাগর-রুনি হত্যার বিচার চেয়ে আন্দোলন করা সাংবাদিক নেতা সোবহার সাহেব নাকি সেই প্রতিবেদন ও আন্দোলনকে ক্যাশ করে হাসিনার উপদেষ্টা হন।