একটি গোষ্ঠী দেশে অরাজকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে
ছবি : সংগৃহীত
শারদীয়
দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার প্রতিবাদে
রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
(ঢাবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। তাঁরা অভিযোগ করে বলেছেন, সহিংসতার
ঘটনাগুলো পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। ধর্মান্ধ একটি গোষ্ঠী দেশে অরাজকতা
সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রতিবাদী
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। তারপর তাঁরা প্রতিবাদী
বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা পৌনে ২টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভ
চলছিল। অবরোধের কারণে শাহবাগ থেকে পল্টন, সায়েন্স ল্যাব, বাংলামোটর ও
টিএসসি অভিমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।শাহবাগ
মোড়ে অবস্থান নেওয়ার আগে ঢাবির টিএসসি এলাকায় জড়ো হন প্রতিবাদী
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁরা মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে আসেন। সকাল সাড়ে
১০টায় কয়েক শ প্রতিবাদী শিক্ষক-শিক্ষার্থী শাহবাগ মোড়ের সড়কের ওপর বসে
পড়েন।শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নানা
স্লোগান দিচ্ছেন। স্লোগানে স্লোগানে তাঁরা বলছেন, ‘সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়
করতে হবে’, ‘মন্দিরে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি।কর্মসূচিতে
অংশ নিয়ে ঢাবির জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ মিহির লাল সাহা বলেন,
সাম্প্রদায়িক সহিংসতার জন্য যারা দায়ী, সেই ধর্মান্ধ গোষ্ঠী দেশে অরাজকতা
সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, এই একবিংশ শতাব্দীতে
এসেও এমন হামলার ঘটনা দেখতে হচ্ছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো
ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না। হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক
শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের
অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র মণ্ডল অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবছরই শারদীয়
দুর্গোৎসবের সময় প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়। কিন্তু এবার আগের সব হিসাব ছাড়িয়ে
গেছে। এই আক্রমণ সাময়িক নয়, এই ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্ন নয়। এটি পূর্বপরিকল্পিত
আক্রমণ।বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষের সম–অধিকার দাবি জানান ঢাবির
জগন্নাথ হলের সাবেক প্রাধ্যক্ষ অসীম কুমার সরকার। তিনি বলেন, এই বিপদের সময়
জাতিধর্ম বর্ণ–নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী
বিষধর সাপের মতো। তাদের অপতৎপরতাকে সমূলে উৎপাটন করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে
কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।কর্মসূচি থেকে সরকারের কাছে সাত দফা দাবি
জানানো হয়। দাবির ব্যাপারে আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলমান থাকবে
বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।