মোঃ রনি আহমেদ রাজু ক্রাইম রিপোর্টার
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরিহাট পেরিফেরির সরকারি জায়গায় নিয়মবহির্ভূতভাবে পাকা স্থাপনা নির্মাণের মহোৎসব তৈরি হয়েছে। এর পেছনে মডেল হিসেবে কাজ করছে স্থানীয় কৈজুরি ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের নির্মাণাধীন একটি পাকা স্থাপনা।
এই স্থাপনাসহ আরও দুটি নির্মাণাধীন স্থাপনা বন্ধে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন লাল নিশান লাগিয়ে দিয়ে গেলেও তা ছুড়ে ফেলে কাজ শেষ করছেন এই চেয়ারম্যানসহ অসাধু কয়েকজন ব্যবসায়ী।আর তাদের এই বেপরোয়া কাজ দেখে নতুন করে পাকা ও আধা পাকা স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করছেন অনেকেই। তবে বিষয়টি সরেজমিনে দেখে মামলা করা হবে বলে আমাদেরকে জানান ,শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ মো. শামসুজ্জোহা।সোমবার (৯ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার কৈজুরি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের সামনেই একটি পাকা স্থাপনা তৈরি করছেন ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম। সেখানে কাজ না করতে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে লাল নিশান লাগিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন স্থানীয় ভূমি কর্মকর্তা।
এর পাশেই আরও দুইটি ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করেছেন স্থানীয় রশিদ মন্ডল ও সোহরাব নামে আরেক ব্যবসায়ী। চেয়ারম্যানের স্থাপনার মতো সে দুটিতেও কাজ বন্ধে লাল নিশান লাগিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন সেই কর্মকর্তা। কিন্তু সবাই সেই নির্দেশনা ও লাল নিশান ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন, মানেননি নির্দেশনা, সম্পন্ন করেছেন স্থাপনার কাজ।
যমুনাতীরবর্তী ছোট হয়ে যাওয়া হাটটি ঘুরে আরও দেখা গেছে, এদের দেখাদেখি কালু ব্যাপারী ও শুকুর আলী নামে আরও দুজন চাল ব্যবসায়ী শুরু করেছেন পাকা স্থাপনা নির্মাণের। নির্দেশনা অমান্য করে চেয়ারম্যান ও অন্য দুজনের কাজ শেষ করা দেখে এই কাজের প্রবণতা পেয়েছেন তারাও। এমনি জানা গেছে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে।স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বললে চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় কথা বলতে চাননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই আমাদের বলেন, পজেশন হিসেবে এই জায়গাটা কিনেছিলেন চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম। যা এলাকার ছোট বড় সবাই জানে। এবং তখন সেটি টিনের ঘর থাকলেও চেয়ারম্যান কিছুদিন আগে ভেঙে ছাদ করে পাকা স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এখন যা প্রায়ই শেষের দিকে।কৈজুরি ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, টিনের ঘরে চুরি ডাকাতি হয় এইজন্য ভেঙে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছি। আমি এসি ল্যান্ডকে বলেছি যদি প্রয়োজন হয় তারা ভেঙে দিতে পারেন। তবে কাজ বন্ধের জন্য প্রশাসন নির্দেশনা দেওয়ার পরেও কেন তা অমান্য করে কাজ করলেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি এসি ল্যান্ডের সঙ্গে কথা বলেই কাজ শেষ করেছি।
কৈজুরি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা মো. আইয়ুব আলী বলেন, চেয়ারম্যানের স্থাপনাটিসহ তিনটি নির্মানাধীন ভবনে লাল পতাকা বেঁধে দিয়ে কাজ বন্ধ করতে বলে এসেছিলাম। কিন্তু তারা তাও শোনেনি।শাহজাদপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাসুদ হোসেনের ব্যবহৃত অফিসিয়াল মুঠোফোনে একাধিকাবার কল দিলেও সাড়া মেলেনি। কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগের এসি ল্যান্ড বদলিজনিত কারণে চলে গেছেন। নতুন এসি ল্যান্ড যোগদান করেই আছেন ছুটিতে।সোমবার (৯ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে শাহজাদপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ মো. শামসুজ্জোহা বলেন, আমি আবারও একবার সরেজমিনে দেখে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। এছাড়াও তাদরে বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।