মোঃ রনি আহমেদ রাজু ক্রাইম রিপোর্টার
পটুয়াখালীর বাউফলে সংবাদ প্রকাশের জেরে উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সেই চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদার বাউফল প্রেসক্লাবের সভাপতি কামরুজ্জামান ওরফে বাচ্চুকে দেখে নেওয়াসহ বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গত রোববার রাতে কামরুজ্জামান বাচ্চু বাউফল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।পুলিশ ও সাধারণ ডায়েরি সূত্রে জানা গেছে, রোববার (২৫ জুলাই) রাত ৮ টা ৪২ মিনিটের সময় শাহিন হাওলাদার তাঁর মুঠোফোন (০১৭১২২৫২৬) নম্বর থেকে কামরুজ্জামানের মুঠোফোনে (০১৭১৪০৭৫৯৪৪) কল করে গালাগাল করেন এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।
একপর্যায়ে শাহিন হাওলাদার বলেন,আমার বিরুদ্ধে নিউজ করতে পার, উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নিউজ করতে পারে না? তোর খবর আছে। তোরে বিভিন্ন মামলা দিয়ে জেল খাটামু। এরপর কামরুজ্জামান বাচ্চু ফোন কেটে দেন।উল্লেখ্য, গত ২৫ জুন ক্ষমতার অপব্যবহার করে সালিসের সুযোগ নিয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক কিশোরীকে (১৪ বছর ২ মাস ১৪ দিন) বিয়ে করে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার ব্যাপক সমালোচিত হন। এ সংক্রান্ত একাধিক প্রতিবেদন সাংবাদিক কামরুজ্জামান তাঁর যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশ করেন।এছাড়াও বরিশাল ক্রাইম নিউজ,শিক্ষাতথ্য টিভি, বরিশাল টাইমস, মানবকন্ঠ, প্রথম আলো, যুগান্তর, ইত্তেফাক, কালেরকণ্ঠসহ বিভিন্ন পত্রিকায় চেয়ারম্যানের বাল্যবিহাহের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।আর পত্রিকায় এ সংক্রান্ত প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনার পর ২৭ জুন (রোববার) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এসএম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সালিশে পছন্দ হওয়ায় কিশোরীকে ইউপি চেয়ারম্যানের নিজেই বিয়ে করার ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পটুয়াখালীর ডিসি, জেলা নিবন্ধক ও পিবিআইকে তদন্ত করে আলাদা তিনটি প্রতিবেদন আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে দাখিল করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহার করায় তার বিরুদ্ধে রুল জারি করেছেন আদালত এবং ওই কিশোরীকে নিরাপত্তা দিতে এসপিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এরপর থেকেই সাংবাদিকদের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার।
প্রবীণ সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম বলেন,‘সংবাদ প্রকাশের জেরে একজন পেশারদার সাংবাদিককে হুমকি দেওয়া স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকিস্বরুপ।’অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, হুমকি কিংবা গালাগাল করা হয়নি। তবে বলেছি, আমার বিয়ে করার বিষয়ে যদি নিউজ হয়। তাহলে উপজেলা চেয়ারম্যানের পরকিয়া প্রেমের অডিও ভাইরালের বিষয়ে কেন নিউজ করলেন না? এরপর তিনি (কামরুজ্জামান) ফোন কেটে দিয়েছেন।’ বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেন, ‘সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি ২১ জুন অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছন।