বাসায় হবে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা
করোনাভাইরাসে
আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সিটি স্ক্যান করানোর পরই
চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় ফিরে গেছেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে
গুলশানের বাসভবন থেকে তাকে বসুন্ধরার আবাসিক এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে
নেওয়া হয়। সেখানে তার সিটিস্ক্যান শেষে ১০টা ২৪ মিনেটে তাকে বাসায় নিয়ে
যাওয়া হয়। এর আগে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম
জাহিদ হোসেন জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট ভালো
এসেছে। জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে তার গুলশানের বাসভবন ফিরোজাতে রেখে
চিকিৎসা দেওয়া হবে।
খালেদা জিয়াকে বাসায় রাখে চিকিৎসার কথা জানান ডা.
এ জেড এম জাহিদ হোসেন। গতকাল রাতে তিনি বলেন, তার (খালেদা জিয়া) পরীক্ষার
প্রতিবেদন অনেক ভালো। সাময়িক প্রতিবেদনে ‘ফাইন্ডিংস’ আছে। ক্লিনিক্যালি এটি
অত্যন্ত মিনিমাম। এখন খালেদা জিয়ার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা বাসায় রেখেই দেওয়া
হবে।
খালেদা জিয়ার ফুসফুসে সংক্রমণের মাত্রা সম্পর্কে জানতে চাইলে
তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি আগেও বুঝিয়ে বলেছি। অত্যন্ত মিনিমাম, নেগলিজিবল
অ্যামাউন্ট। যেটাকে সত্যিকার অর্থে মাইল্ড বলা যায়। আগামীকাল (শুক্রবার)
ওনারা পূর্ণাঙ্গ একটা রিপোর্ট দেবে তারপর বোঝা যাবেখালেদা
জিয়ার চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া আছে জানিয়ে ডা. এ জেড এম জাহিদ
বলেন, দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া আছে। সপ্তম দিন
হওয়াতে এখনো শঙ্কামুক্ত বলা যাবে না। ১২ থেকে ১৪ দিন পর সেটা বলা যাবে।
আমাদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ আছে। ফুসফুসের সংক্রমণ বোঝার জন্য আগে
এক্সরে করা হতো কিন্তু এখন সিটি স্ক্যান করা হয়। এতে ভালোমতো সবকিছু বোঝা
যায়। যেটা স্বাভাবিক এক্সরে-তে বোঝা যায় না। তবে সিটি স্ক্যান রিপোর্ট অনেক
ভালো এসেছে। করোনার যে উপসর্গগুলো অন্যান্য রোগীর ক্ষেত্রে থাকে সেগুলো
ম্যাডামের ছিল না।
ডা. জাহিদ বলেন, আমাদের চিকিৎসকরা ম্যাডামের
ফুসফুসের কী অবস্থা তা দেখতে চেয়েছিলেন। তাই আজকে হাসপাতালে তার সিটি
স্ক্যান করা হয়েছে। প্রাথমিক যে রিপোর্ট পেয়েছি তাতে দেখা গেছে, ম্যাডামের
ফুসফুসে অত্যন্ত মিনিমাম ইনফেকশন। বিষয়টি পর্যালোচনা করে তার পুত্রবধূ
ডা.জোবাইদা রহমানসহ অন্য চিকিৎসকরা আলোচনা করে কোনো ওষুধ প্রয়োজন হলে যোগ
করবেন। পরবর্তীতে তার শারীরিক অবস্থা আমাদের নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে
হবে। এটা আগামী ১৪ দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
খালেদা জিয়ার রোগ
মুক্তির জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে জাহিদ বলেন, এখানে (বাসা) বা
হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এখনও তাকে শঙ্কামুক্ত বলার সময়
আসেনি।
জাহিদ হোসেন আরও বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যাপারে লন্ডনে
অবস্থানরত তার বড় ছেলে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী চিকিৎসক জোবাইদা রহমানের
সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এ ছাড়া বিদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গেও আলোচনা করা হবে।
বৃহস্পতিবার
বিকেলে গুলশানের বাসা ফিরোজায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখে আসার পর তার
ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের প্রধান অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের সঙ্গে
কথা বলেন। ডা.এফএম সিদ্দিকী বলেন, ‘ম্যাডামের আজকে সেভেন ডে। কোভিডের
পরিভাষায় ম্যাডাম এখন দ্বিতীয় সপ্তাহে এন্ট্রি হচ্ছে। কোভিডের প্রথম ও
দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে একটা পার্থক্য আছে। কোভিডের যত সাবধানতা, যত জটিলতা
সেগুলো সাধারণত সেকেন্ড উইকে হয়। সেজন্য আমরা আরেকটু সাবধানতা অবলম্বন
করতে চাই।’
প্রসঙ্গত, গত রোববার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরপরই সেদিন
বিকালে বিশেষজ্ঞদের এই টিম ফিরোজায় এসে খালেদা জিয়াকে দেখেন। চার দিন পর আজ
বৃহস্পতিবার তারা তার বিভিন্ন রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করেন।