যুবলীগ নেতাকে গাড়িচাপার পর অস্ত্র হাতে নাচানাচি কাউন্সিলর জলিলের!
কুমিল্লা দক্ষিণ প্রতিনিধি
এরপর শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চকবাজারের কাশারীপট্টি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে পুলিশ। ওই সময় তিনি পাঞ্জাবি পরিহিত অবস্থায় ছিলেন। তার হাতে ছিল একটি রামদা।
আটকের আগে কাউন্সিলর জলিল দেশিয় অস্ত্র নিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়ান। এ সময় স্থানীয় এক ব্যক্তির ধারণ করা তিন মিনিট ৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায় পুলিশের সদস্যরা কাউন্সিলর জলিলকে আটক করতে গেলে সে ধস্তাধস্তি করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সেখানে কয়েকজন নারীও তাকে সহযোগিতা করেন। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তাকে বাগে আনতে পুলিশ তার উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন জলিল। পরে পুলিশ তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
এদিকে যুবলীগ নেতা রোকনকে গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনায় তিনি নিজে বাদী হয়ে কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
রোকন উদ্দিন কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। তিনি কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের অনুসারী।
কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল হক জানান, আহত রোকন উদ্দিন রোকন নিজেই বাদী হয়ে আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা মামলা করেছেন। মামলার প্রধান আসামি কাউন্সিলর সাইফুল বিন জলিল। তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে আদালত তাকে কারাগারে পাঠান। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছি। এখনো রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি। মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার বিকেলে সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘরে হামলার প্রতিবাদে যুবলীগ নেতা রোকনের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয় চকবাজার এলাকায়। এ সময় বিপরীত দিক থেকে গাড়ি নিয়ে এসে রোকনকে গাড়ী চাপা দেন কাউন্সিলর জলিল। এতে তার বাম পা ভেঙে যায় এবং ডান পা গুরুতর জখম হয়। এ সময় কোমড় থেকে পিস্তল বের করে ফাঁকা গুলিও চালান জলিল। তবে ওই ঘটনায় কেউ গুলিবিদ্ধ হয়নি।
কাউন্সিলর জলিল আগে বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন বর্তমান সিটি মেয়র ও বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কুর অনুসারী। চলতি মাসের শুরুতে চকবাজার বাসস্ট্যান্ডের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণসহ এলাকায় আধিপাত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের একটি পক্ষের সঙ্গে বিরোধে জড়ান তিনি। এতে কোনঠাসা হয়ে গত ৫ মার্চ কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য আনজুম সুলতানা সীমার হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন তিনি।
গত সিটি নির্বাচনে একই ওয়ার্ড থেকে জলিল বিএনপির সমর্থিত আর যুবলীগ নেতা রোকন আওয়ামী লীগের সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনে পরাজিত হন রোকন। এরপর থেকে তাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়।