সনাতন ধর্ম অনুযায়ী প্রতিমা পূজা করে আবার বিসর্জন দেওয়া হয়… কেন?
সনাতন ধর্ম অনুযায়ী প্রতিমা পূজা করে আবার বিসর্জন দেওয়া হয়… কেন? এর মূল তাৎপর্য….!
সনাতন ধর্ম অনুযায়ী প্রতিমা পূজা করে আবার বিসর্জন দেওয়া হয়… কেন? এর মূল তাৎপর্য….!
সনাতন ধর্ম বিশ্বাস করে, “মানুষের দেহ পাঁচটি উপাদান দিয়ে তৈরি।” যথাঃ আকাশ, বায়ু, অগ্নি, জল ও মাটি। তাই মৃত্যুর পর এ দেহ আগুনে দাহ করা হয় অথবা মাটি দেওয়া হয়। যে উপাদান দিয়ে এই দেহ তৈরি, মৃত্যুর পর আবার সেই একই উপাদানে মিশে যায়।
ঈশ্বর সর্বত্রই বিরাজিত। প্রতিটি বস্তু, প্রতিটি প্রাণীর মধ্যেই তিনি আছেন। তবে পঞ্চ উপাদানে গড়া এই মানব দেহের প্রতীক হিসেবেই আমরা পূজার সময় প্রতিমা তৈরি করি মাটি দিয়ে। পরবর্তীতে সেই মাটির প্রতিমায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে; তাকে ঈশ্বর জ্ঞানে পূজা করি। এই প্রতিমা পূজার সর্বশেষ ধাপ হচ্ছে বিসর্জন! জলের মাধ্যমেই যেন মাটির প্রতিমা পুনরায় প্রকৃতিতে মিশে যায়, সেই জন্যই আমরা গঙ্গার জলে প্রতিমা বিসর্জন দেই।
আমাদের হৃদয়ে যে নিরাকার ঈশ্বর রয়েছে, উপাসনার নিমিত্তে মাটির প্রতিমা তৈরি করে তাকে “সাকাররূপ” দেওয়া হয়। পূজা শেষে পুনরায় সেই “সাকাররূপ” কে বিসর্জন দিয়ে নিরাকার ঈশ্বরকে হৃদয়ে স্থান দেওয়া হয়।
সেই কারণের দুর্গা পূজার সময় যখন প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়; তখন মায়ের প্রতি আমাদের প্রার্থনা থাকে, “মা” তুমি আবার এসো আমাদের মাঝে। এই একটি বছর তুমি থাকবে আমাদের হৃদয়ে। আবার বছর পরে তোমার প্রতিমা গড়ে আমরা স্বাড়ম্বে তোমার পূজা করব।”
যে জন্ম নিয়েছে ; তার মৃত্যু অনিবার্য! এটায় প্রকৃতির শ্বাশত নিয়ম। ঠিক তেমনই যাকে আহ্বান করা হয়, তার বিসর্জনও অনিবার্য। বিসর্জনের মাধ্যমেই “পুনরায় আগমনের” আশা সঞ্চারিত হয়। এই সকল কারণের আমরা প্রতি বছর হৃদয়স্থ ঈশ্বরের মাটির প্রতিমা গড়ে তাঁকে বাহ্যিক ভাবে পূজা করি এবং পূজা শেষে বিসর্জনের মাধ্যমে তাকে আবার হৃদয়ে স্থানান্তরিত করি। এটিই প্রতিমা পূজা ও বিসর্জনের মূল তাৎপর্য।
জয় মা দুর্গা
আপনার মতামত লিখুন :
Leave a Reply
More News Of This Category