নবীগঞ্জে একটি পরিবারকে সমাজচ্যুত করেছে গ্রামের মাতব্বররা! ইউএনও বরাবরে লিখিত অভিযোগ
নবীগঞ্জ প্রতিনিধি:- নবীগঞ্জের দেবপাড়া ইউনিয়নের বৈঠাখাল শাপলাবাগ গ্রামের একটি পরিবারকে সমাজচ্যুত (পঞ্চায়েতের বাদ) একঘরে করে রাখার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে গ্রাম্য মাতব্বরদের বিরুদ্ধে ৷ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্যাতিত পরিবার গতকাল বুধবার (২৩ অক্টোবর) নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷
অভিযোগে উল্লেখ, ওই গ্রামের মাতব্বর নৃত খুর্শেদ আলীর পুত্র সাকির আলী (৪৫), মৃত লেপাছ মিয়ার পুত্র ছানু মিয়া (৪০), আব্দুর রউফের পুত্র খোকন মিয়া (৩৫), আব্দুর রহমানের পুত্র গিয়াস মিয়া (৫০), মৃত প্রবাদ দাশের পুত্র নিখিল দাশ (৪০), মৃত তরই দাশের পুত্র মানিক দাশ (৬০), হরিধন দাশের পুত্র মঞ্জু দাশ (৪০), সুনিল দাশের পুত্র প্রবাদ দাশ (৪০)
রাকেশ দাশের পুত্র শংকর দাশ (৩০) সহ গ্রামের মাতব্বর প্রভাবশালীরা একজোট হয়ে মৃত ময়না মিয়ার পুত্র মোঃ মবশ্বির মিয়া। তিনি পেশায় একজন কৃষক। তিনি অভিযোগে উল্লেখ করে বলেন, তার পরিবারের বর্তমান সদস্য সংখ্যা ১৪ জন। এর মধ্যে দুই ছেলে প্রবাসী। গত (২০ সেপ্টেম্বর) থেকে উল্লেখিত গ্রাম্য মাতব্বররা পূর্ব শত্রুতার জেরধরে আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে একটি অবৈধ আইন গ্রামে জারি করেন, এবং মানবাধিকার লঙ্গন করে তার পরিবারকে সমাজচ্যুত (পাচোরবাদ) একঘরে করে রাখেন। এতে তার পরিবার পরিজন নিয়ে তিনি গ্রামে চলাফেরা ও পরিবারের সদস্যরা গ্রামের রাস্তাঘাটে চলাচল করতে গেলে গ্রামের লোকজন নানাভাবে বাঁধা নিষেধ করেন এবং তার পরিবারের সদস্যদের সাথে গ্রামের কোন লোক কথা বললে তার ৫শ টাকা জরিমানার অবৈধ কালো আইন পাশ করেন মাতব্বর সাকীর আলী ও তার সহযোগীগণ। এমনকি তারা তাদের পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলায় গ্রামের কয়েকটি পরিবারের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করেছেন মর্মে ও অভিযোগ উঠেছে৷ যাহা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ।
তিনি আরো বলেন, তার ২ নাতী স্কুল ছাত্র তারা স্কুলের লেখাপড়ায় যেতে বিঘ্নতার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে তাহারা সামাজিক আর্থিক, মানসিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হচ্ছেন। এর কারণ হিসেবে তিনি আরো উল্লেখ করেন, একই গ্রামের নিখিল দাশ সহ তার লোকজনের সাথে জায়গা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দীর্ঘ দিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিলো। বৈঠাখাল মৌজাধীন জে.এল নং- ১৩৩, খতিয়ান নং- ০১, দাগ নং- ৭৯, শ্রেণি- খাল, হালে- ভিট, ভূমির পরিমাণ- ৪ শতাংশ। এই জাগয়াতে তার ছেলে একটি দোকান কোটা দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল।
সম্প্রতি, এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বানিয়াচং ক্যাম্প বরবারে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন, প্রতিপক্ষের লোকজন৷ এবং বিরোধপূর্ণ সরকারী ভূমির উপর থেকে তার ছেলের দোকান ঘর সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে, দুঃখজন হলেও সত্য তাদের দোকার ঘর ও মালামাল সরিয়ে নিতে না নিতেই সেনাবাহিনীর সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে তাদের পাকা ঘর ভেঙ্গে চুরে প্রায় এক লক্ষ টাকার মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষের লোকজন৷ যাহার ভিডিও চিত্র রয়েছে তাদের কাছে। এছাড়াও ভূমি খেকো চক্র উক্ত তপশীল বর্ণিত সরকারি ভূমির উপরে ফলানো বিভিন্ন জাতের প্রায় ১০/১৫টি গাছ নির্বিচারে কর্তন করে যার আনুমানিক মূল্য প্রায় এক লক্ষাধিক টাকা হবে। এই সরকারি জায়গা জবরদখল করে আবারও তারা গাছের চারা রোপন করে রাখে যাহা এই বিরোধপূর্ণ ভূমি থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অতিব জরুরী। উল্লেখিত ভূমি খেকো চক্রকের বাঁধা নিষেধ করলে তারা তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণে হত্যার হুমকি সহ সমাজচ্যুত করে রাখে এবং তার ব্যবসায়ী ছেলে তাদের হুমকির কারণে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এই সরকারি ভূমির জন্য বিগত ৯ জুলাই ২০২০ইং তারিখে শ্রেণি পরিবর্তন ক্রমে চিরস্থায়ী বন্দোবস্থ পাওয়ার জন্য উপজেলা সহকারী (কমিশনার ভূমি) বরাবরে আবেদন করেন তার ছেলে মোঃ ফরজাদুজ্জামান মুহিত। এতেই কাল হয়ে দাড়ায় প্রতিপক্ষের লোকজন। তারা তাদের জানমালের ক্ষতি সাধন করিতে একজোট হয়ে রাস্তাঘাটে দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র সহকারে ঘুরাফেরা করে ও হুমকি ধামকিতে গ্রামে আতংক সৃষ্টি করছে।উক্ত বিষয়ে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়৷
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাশ অনুপ বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি। বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।