এসকে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আরও তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণ
ফারমার্স
ব্যাংকের ৪ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির দুর্নীতির মামলায় সাবেক প্রধান
বিচারপতি এসকে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আরও তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন
আদালত।
সাক্ষীরা হলেন-মামলার রেকর্ডিং অফিসার দুদকের সহকারী পরিচালক
মো. মনিরুল ইসলাম, ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখার অ্যাসিস্টটেন্ট ভাইস
প্রেসিডেন্ট মৃনাল মজুমদার এবং একই শাখার এক্সিকিউটিভ অফিসার রেজাউল হাসান।
আজ
মঙ্গলবার ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ
সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের পর ১ সেপ্টেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন
ঠিক করেন।
এর আগে গত ১৮ আগস্ট মামলার বাদী দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল
হোসেন সাক্ষ্য দিয়েছন। এখন পর্যন্ত মামলাটিতে চার জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ
হলো।
আজ শুনানিকালে মামলাটিতে জামিনে থাকা অপর দুই আসামি ফারমার্স
ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম শামীম ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস
প্রেসিডেন্ট ও সাবেক ক্রেডিট প্রধান গাজী সালাহউদ্দিন এবং ব্যাংকটির
ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল
হক, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান, নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা হাজির হন। আর
ফারমার্স ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক ও অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো.
মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী) কারাগারে থেকে আদালতে আনা হয়।
মামলাটিতে
এসকে সিনহাসহ চারজন পলাতক রয়েছেন। অপর তিনজন হলেন-ফারমার্স ব্যাংকের
ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট শাফিউদ্দিন আসকারী, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা সান্ত্রী
রায় ওরফে সিমি ও তার স্বামী রণজিৎ চন্দ্র সাহা।
এর আগে গত ১৩ আগস্ট একই আদালত এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে ১৮ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেন।
গত
বছর ১০ ডিসেম্বর মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক বেনজীর
আহমেদ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এর আগে একই বছর ১০ জুলাই দুদক পরিচালক
সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা
হয়, ফারমার্স ব্যাংকে শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহার নামে মঞ্জুরকৃত ঋণের
৪ কোটি টাকা সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সুপ্রিমকোর্ট
সোনালী ব্যাংক শাখার হিসাবে জমা হয়। সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর : ৪৪৩৫৪৩৪০০৪৪৭৫-এ
জমা হওয়ার পর ওই টাকা বিভিন্নভাবে স্থানান্তর করে উত্তোলন করা হয়। আসামিরা
পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার
করে নিজেরা লাভবান হয়ে এবং অন্যদের লাভবান করতে এ ধরনের অপরাধ করেন। তারা
অবৈধভাবে ভুয়া ঋণ সৃষ্টির মাধ্যমে ৪ কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে
স্থানান্তর করে নগদে উত্তোলন ও বিভিন্ন পে-অর্ডারের মাধ্যমে নিজ আত্মীয়র
নামীয় হিসাবে হস্তান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন। পরে সেই অর্থ নিজেদের
ভোগদখলে রেখে তার অবৈধ প্রকৃতি, উৎস অবস্থান গোপন বা এর ছদ্মাবরণে পাঁচার
করেছেন মর্মে তদন্তে প্রমাণিত হয়। যা দ-বিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা ও ১৯৪৭
সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং
প্রতিরোধ আইনের ৪(২)(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
প্রসঙ্গত, ষোড়শ
সংশোধনী বাতিলের রায় এবং কিছু পর্যবেক্ষণের কারণে ক্ষমতাসীনদের তোপের মুখে
২০১৭ সালের অক্টোবরের শুরুতে ছুটিতে যান তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র
সিনহা। পরে বিদেশ থেকেই তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন।