শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
রাস্তার কাজ না করে টাকা ভাগাভাগি( সওজ) ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে রূপগঞ্জে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে স্বজনদের সংবাদ সম্মেলন মাগুরা গোপালগ্রাম ইউনিয়ন কৃষকদলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এ্যাডভোকেট মিথুন রায় চৌধুরী পটুয়াখালী ভার্সিটির, পোস্টগ্রাজুয়েট স্ট্যাডিজ কমিটির সভা।। দুস্থ ও অসহায় মানুষের ভরসা যেন ঝর্ণা মান্নান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট সাপাহারে জোর পূর্বক লক্ষাধিক টাকার মাছ উত্তোলন পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায়, মসজিদের ইমামের গরু লুট।। দুমকি উপজেলায়, গরু লুঠ মামলার ২ আসামি আটক শ্রীনগর থানা থেকে যুবদল নেতাকে ছিনিয়ে নিলো বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নওগাঁর মান্দায় ভূমিহীন কৃষকদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ
Headline
Wellcome to our website...
করোনাভাইরাস সংক্রমিতের সংখ্যা হিসাবে বিশ্বতালিকায় ১৫ নম্বরে থাকলেও নতুন করে আক্রান্ত বাংলাদেশ ১০ নম্বরে
/ ৪ Time View
আপডেট : বুধবার, ১৯ আগস্ট, ২০২০, ৩:৪৪ পূর্বাহ্ন

নতুন সংক্রমণে বিশ্বতালিকার ১০ নম্বরে বাংলাদেশ

নতুন সংক্রমণে বিশ্বতালিকার ১০ নম্বরে বাংলাদেশ
করোনাভাইরাস সংক্রমিতের সংখ্যা হিসাবে বিশ্বতালিকায় ১৫
নম্বরে থাকলেও নতুন করে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বিচারে বাংলাদেশের নাম দশ
নম্বরে উঠে এসেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশের
ওপরে রয়েছে ভারত, আমেরিকা, ব্রাজিল, রাশিয়া, পেরু, মেক্সিকো, কলোম্বিয়া,
আর্জেন্টিনা ও ফিলিপাইন। অথচ মাত্র দুদিন আগেও এ তালিকায় বাংলাদেশের
অবস্থান ছিল ১৩ নম্বরে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও
প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের দেওয়া আপডেট তথ্য
অনুযায়ী, সোমবার (২৪ ঘণ্টায়) বাংলাদেশে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ২
হাজার ৫৯৫ জন। এদিন ভারতে ৫৪ হাজার ২৮৮ জন, আমেরিকায় ৪০ হাজার ৬১২ জন,
ব্রাজিলে ২৩ হাজার ৪৮ জন, কলোম্বিয়ায় ৮ হাজার ৩২৮ জন, পেরুতে ৫ হাজার ৫৪৭
জন, রাশিয়ায় ৪ হাজার ৮৯২ জন, আর্জেন্টিনায় ৪ হাজার ৫৫৭ জন, মেক্সিকোতে ৪
হাজার ৪৪৮ জন ও ফিলিপাইনে ৩ হাজার ৩১৪ জন নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছে।

এর
দুইদিন আগে অর্থাৎ শনিবার (২৪ ঘণ্টায়) ভারতে ৫৮ হাজার ১০৮ জন, আমেরিকায় ৩৭
হাজার ৬৮২ জন, ব্রাজিলে ২২ হাজার ৩৬৫ জন, কলোম্বিয়ায় ১১ হাজার ৬৪৩ জন,
পেরুতে ১০ হাজার ১৪৩ জন, রাশিয়ায় ৪ হাজার ৯৬৯ জন, আর্জেন্টিনায় ৫ হাজার ৪৬৯
জন, মেক্সিকোতে ৬ হাজার ৩৪৫ জন ও ফিলিপাইনে ৩ হাজার ৩২৭ জন নতুন করে
করোনায় সংক্রমিত হয়। এ ছাড়া ফ্রান্সে ৩ হাজার ১৫ জন, ইরাকে ৪ হাজার ৩৪৮ জন,
দক্ষিণ আফ্রিকায় ৩ হাজার ৬৯২ জন ও স্পেনে ৩ হাজার ৪৯০ জন নতুন রোগী শনাক্ত
করা হয়। এদিন বাংলাদেশে শনাক্তকৃত নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল ২ হাজার ২৪ জন।

এদিকে
মঙ্গলবার (২৪ ঘণ্টায়) দেশে নতুন করে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার
২০০ জনের শরীরে। যা তিন দিন আগে অর্থাৎ গত শনিবারে শনাক্ত হওয়া রোগীর চেয়ে ১
হাজার ১৭৬ জন বেশি। এবং আগের দিনের (সোমবার) তুলনায় ৬০৫ জন বেশি। অর্থাৎ
সংক্রমিত রোগীর বৃদ্ধির হার ২৩ দশমিক ৩০ শতাংশ।

ওয়ার্ল্ডোমিটারের এ
পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা গেছে, উপরের তালিকার ১০টি দেশের মধ্যে পেরু,
মেক্সিকো, কলোম্বিয়া, ফিলিপাইন এই ৪টি দেশে শনিবারের তুলনায় সোমবার নতুন
আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। এছাড়া এ তালিকার বাইরে দক্ষিণ আফ্রিকা, স্পেন,
ফ্রান্স ও ইরাকেও ওই সময় নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। এরমধ্যে
পেরুতে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে নতুন করে সংক্রমিত রোগী প্রায় অর্ধেকে
নেমে এসেছে। অথচ বিশ্বতালিকার ১৩ নম্বরে থাকা বাংলাদেশে নতুন করে শনাক্ত
হওয়া রোগীর সংখ্যা প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে। ফলে নিচের দিকে থাকা তিনটি দেশকে
টপকে বাংলাদেশের অবস্থান ১০ নম্বরে এসে দাঁড়িয়েছে।

দেশের করোনা
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, বিশ্বের করোনায়
আক্রান্ত দেশগুলোতে নতুন করে সংক্রমনের হার ক্রমেই নিম্নমুখি হলেও
বাংলাদেশে তা অনেকটা একই জায়গায় স্থিতিশীল রয়েছে। বরং সময় সময়ে তা কিছুটা
বাড়ছে। করোনা নিয়ে সরকারের দায়িত্বশীলদের বিভ্রান্তিকর তথ্যে জনসচেতনতা
উধাও হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতি চলমান থাকলে দেশে
করোনার প্রকোপ হ্রাস পেতে দীর্ঘ সময় লাগবে। এমনকি আগামীতে এ মরণব্যাধির
প্রকোপ আরো ভয়াবহভাবে বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

এদিকে
প্রতি ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সংক্রমিত রোগীর যে সংখ্যা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
থেকে প্রকাশ করা হচ্ছে, তা দেশের করোনা পরিস্থিতির প্রকৃত চিত্র কি-না তা
নিয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সংশয় প্রকাশ করেছেন। তাদের ভাষ্য, এটি ২৪
ঘন্টায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা চিত্র হলেও সংক্রমিত রোগীর তথ্য চিত্র নয়।
কেননা দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ করোনার উপসর্গ নিয়েও নমুনা পরীক্ষার বাইরে
রয়েছে। সম্প্রতি একটি জরিপেও সে চিত্র উঠে এসেছে। আইইডিসিআরের শীর্ষস্থানীয়
কর্মকর্তারাও এ বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এ প্রসঙ্গে তারা বলেন, স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর থেকে নতুন করে সংক্রমিত রোগীর যে সংখ্যা প্রকাশ করা হয়, তা
শুধুমাত্র ল্যাবে যাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাদের মধ্যে শনাক্ত হওয়া
রোগীদের সংখ্যা। এতে প্রকৃত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা জানার কোনো সুযোগ নেই।
তবে সম্প্রতি যে জরিপ করা হয়েছে, তা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে তৈরি
করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে সরকারি হিসাবের সঙ্গে জরিপের তথ্যে গড়মিল থাকাটাই
স্বাভাবিক।

স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নানা প্রতিবন্ধকতা ও
ভোগান্তির কারণে টেস্ট করানোর ব্যাপারে সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম অনাগ্রহ
দেখা দিয়েছে। যা করোনা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই দেশের করোনা পরিস্থিতির প্রকৃত চিত্র পেতে হলে সবার আগে নমুনা পরীক্ষার
সুযোগ বাড়ানো জরুরি। পাশাপাশি এ ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে।
অথচ দেশে সংক্রমিত রোগের তথ্য গোপনের অপরাধে সাজা দেওয়ার বিধান থাকলেও
নমুনা পরীক্ষার যথেষ্ট সুযোগ বাড়ানো হয়নি। যা রাষ্ট্রীয় বিধানের সঙ্গে
সংঘর্ষিক বলে মনে করেন তারা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের
ভাইরোলোজি বিভাগের একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এ প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশের
জনসংখ্যার তুলনায় অনেক কম সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। টেস্ট করতে আসা
মানুষজন নানাভাবে হয়রানি-ভোগান্তির শিকার হয়ে এ ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়েছে।
এছাড়া ফল পেতে বিলম্ব, টেস্ট ফি ধার্য, নমুনা পরীক্ষায় জালিয়াতি ও ভুল
ফলাফলের নেতিবাচক প্রভাব এর উপর পড়েছে। ফলে একান্ত বিপাকে না পড়লে কেউ
নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছেন না। তাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে শুধুমাত্র এদের
মধ্যে শনাক্তদের সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞ ওই চিকিৎসক অভিযোগের
সুরে বলেন, এরকম আংশিক চিত্র দিয়ে একটি দেশের মহামারি প্রতিরোধের কৌশল
তৈরি করা সম্ভব নয়। দেশে করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্য কমিউনিটি ভিত্তিক
সার্ভেইলেন্স অনেক বাড়াতে হবে। কমিউনিটি পর্যায়ে যাদের উপসর্গ নেই তাদের
শনাক্ত করাও জরুরি।

গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে দেশে শনাক্ত রোগীর
হার একই রকম থাকার বিষয়টি সন্দেহজনক দাবি করে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন,
বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পিক-এ উঠে তিনমাস পর আবার কমে
আসে। কিন্তু বাংলাদেশে সংক্রমণ একটি বিশেষ উচ্চতায় ওঠার পর তা একই জায়গায়
প্রলম্বিত হচ্ছে। মহামারি প্রতিরোধের কৌশল বিজ্ঞান ভিত্তিক না হওয়ায় এমনটি
হচ্ছে বলে মনে করেন তারা।

করোনা ভাইরাসের চিকিৎসার সঙ্গে সরাসরি
সম্পৃক্ত কয়েকজন চিকিৎসক এ মরণব্যাধি মোকাবেলায় সফল কয়েকটি দেশের উদাহরণ
দিয়ে বলেন, যেসব দেশ করোনা সংক্রমণ ঘটার সাথে সাথে খুব দ্রম্নত লকডাউন,
পরীক্ষা, কন্টাক্ট ট্রেসিং, আইসোলেশন, চিকিৎসা ইত্যাদি করেছে, ওই দেশগুলোই
সবচেয়ে সফল। তাই করোনা মোকাবেলা করতে হলে, এ সংক্রমনে দেশ কোন পর্যায়ে আছে
তা আগে নির্ণয় করতে হবে। দেশের সবগুলো জায়গায় র?্যান্ডম স্যাম্পলিং কি
পরিমাণে মানুষ ইতিমধ্যেই ইনফেকটেড হয়েছে ও এক্সপোজড হয়েছে সেই ধারণাটা তৈরি
করা। পরবর্তীতে এর প্রতিরোধের কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।

দেশের করোনা
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এমন কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, সামাজিক
যোগাযোগ যত বাড়বে, করোনা ততই ছড়াবে- এটাই স্বাভাবিক। অথচ দেশে করোনা
নিয়ন্ত্রণে না আসলেও অফিস-আদালত-কলকারখানা ও গণপরিবহনসহ সব জায়গায় আগের মতো
স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবনতা পুরোপুরি উধাও হয়ে
গেছে। এ সময় যতটা সচেতনতা তৈরি করার কথা ছিল, ততটা আমরা পারিনি। শুরু থেকেই
স্বাস্থ্যবিধি মানানোর যে কাজ, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তা করেনি। মানুষও সচেতন
নয়, আইন না মানার প্রবণতা তাদের ভেতরে রয়েছে, কিন্তু সে আইন না মানার কারণে
তার শাস্তি কী হতে পারে, এর কোনো উদাহরণও সরকার সৃষ্টি করতে পারেনি। বরং এ
বিষয়টি সাধারণ মানুষের খেয়াল-খুশির উপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কাউকে আইন
মানাতে বাধ্য করা হয়নি। পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতি দ্রম্নত নিয়ন্ত্রণে আসছে
সরকারের নীতি-নির্ধারকরা এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন। ফলে সাধারণ
মানুষের মধ্যে আগের চেয়ে আরো বেশি অসচেতন হয়ে উঠেছে। এ পরিস্থিতি চলমান
থাকলে শুধু সংক্রমনের সংখ্যাই নয়, মৃতু্যর সংখ্যাও বাড়বে বলে হুশিয়ার করেন
তারা।

এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি
অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, দেশের বেশিরভাগ মানুষ এখন মাস্ক
ব্যবহার করছে না, সামাজিক দূরত্বও মেনে চলছে না। অফিস-আদালত, কলকারখানা,
মার্কেট-শপিংমল ও রাস্তাঘাট সবখানেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবনতা উধাও
হয়ে গেছে। হঠাৎ করেই যেন সাবধানতা অনেকটাই কমে গেছে। এ পরিস্থিতিতে দেশে
করোনার আরেকটি ঢেউ আসার আশঙ্কা রয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page