রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:৫২ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
রাস্তার কাজ না করে টাকা ভাগাভাগি( সওজ) ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে রূপগঞ্জে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে স্বজনদের সংবাদ সম্মেলন মাগুরা গোপালগ্রাম ইউনিয়ন কৃষকদলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এ্যাডভোকেট মিথুন রায় চৌধুরী পটুয়াখালী ভার্সিটির, পোস্টগ্রাজুয়েট স্ট্যাডিজ কমিটির সভা।। দুস্থ ও অসহায় মানুষের ভরসা যেন ঝর্ণা মান্নান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট সাপাহারে জোর পূর্বক লক্ষাধিক টাকার মাছ উত্তোলন পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায়, মসজিদের ইমামের গরু লুট।। দুমকি উপজেলায়, গরু লুঠ মামলার ২ আসামি আটক শ্রীনগর থানা থেকে যুবদল নেতাকে ছিনিয়ে নিলো বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নওগাঁর মান্দায় ভূমিহীন কৃষকদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ
Headline
Wellcome to our website...
৩৭টি সড়ক সংস্কারে ২২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ।
/ ২ Time View
আপডেট : মঙ্গলবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৪:৫৭ পূর্বাহ্ন

৩৭টি সড়ক সংস্কারে ২২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ।

৩৭টি সড়ক সংস্কারে ২২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ। এর কোনোটির সংস্কার সম্প্রতি শেষ হয়েছে। কোনোটির কাজ চলছে।

চট্টগ্রাম

কোনো ধরনের খানাখন্দ নেই আখতারুজ্জামান চৌধুরী উড়ালসড়কে। কিন্তু তা সংস্কার করতে উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। গতকাল বিকেল ছয়টায় চট্টগ্রাম নগরের ২ নম্বর গেট এলাকায়।

কোনো
ধরনের খানাখন্দ নেই আখতারুজ্জামান চৌধুরী উড়ালসড়কে। কিন্তু তা সংস্কার
করতে উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। গতকাল বিকেল ছয়টায় চট্টগ্রাম
নগরের ২ নম্বর গেট এলাকায়।

চট্টগ্রাম নগরের আখতারুজ্জামান চৌধুরী উড়ালসড়কের কোথাও খানাখন্দ নেই। নির্মাণকাজ শেষে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ৫ দশমিক ২ কিলোমিটারের এই উড়ালসড়ক সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেয় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। অথচ ভালো অবস্থায় থাকা এই সড়ক ১৫ কোটি টাকায় আবার পিচ ঢালাই করতে চায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী ও উড়ালসড়কের প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আখতারুজ্জামান চৌধুরী উড়ালসড়কের ওপরের রাস্তা আগামী চার–পাঁচ বছরে নতুন করে সংস্কারের প্রয়োজন হবে না; বরং বর্তমান অবস্থায় পিচ ঢালাই করতে গেলে উড়ালসড়কের ওপর লোড (ভার) বেড়ে যাবে।এ তো গেল উড়ালসড়কের কথা। চট্টগ্রাম শহরের বৌদ্ধমন্দির সড়ক সংস্কারের প্রকল্প নিয়েছে সিটি করপোরেশন। যদিও আধা কিলোমিটারের এই সড়কের কাজ শেষ হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারিতে। ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি টাকা। এই সড়ক নতুন করে সংস্কারের কোনো প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।এই দুটি সড়কের মতো ছোট-বড় অন্তত ৩৭টি ভালো সড়ক সংস্কারে ২২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে সিটি করপোরেশন। অথচ এসব সড়কের উন্নয়নে গত চার বছরে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৮৭ কোটি টাকা।চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সম্প্রতি বিভিন্ন সড়কের সংস্কার ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে ২ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকার একটি বড় প্রকল্প নিয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনেই ভালো অবস্থায় থাকা ৩৭টি সড়ক সংস্কারের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন গত জুনে কয়েকটি শর্তে প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়। এখন এটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায়।সংস্কারকাজ চলছে অথবা সম্প্রতি শেষ হয়েছে, এমন সড়ক নতুন প্রকল্পে সংস্কারের জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি বলে দাবি করেন সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম। তবে নির্দিষ্ট সড়কের নাম জানানো হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, একই রাস্তা হলেও সংস্কার না হওয়া অংশে কাজ করা হবে। আর একটি প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়িত হতে চার–পাঁচ বছর লেগে যায়। এর মধ্যে ভারী যান চলাচল, জলাবদ্ধতা ও সেবা সংস্থার খোঁড়াখুঁড়ির কারণে অনেক রাস্তা সংস্কারের পরেও নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সংস্কারের প্রয়োজন হয়।সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আরও বলেন, এরপরেও যদি রাস্তা ঠিক থাকে, তাহলে পরে প্রকল্প সংশোধনের সময় বাদ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।অবশ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রাস্তা সংস্কারের পর যাতে খোঁড়াখুঁড়ি বা অন্য কোনো কারণে দু–চার বছরের মধ্যে চলাচলের অনুপযোগী না হয়ে পড়ে, সেটা নিশ্চিত করা জরুরি। নইলে বছর বছর বিপুল টাকা ব্যয় হবে। মানুষও সুফল পাবে না।একটি সড়ক পরিকল্পিতভাবে করা হলে ১০ থেকে ১৫ বছর টিকে থাকে বলে জানান চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদ ওমর ইমাম ও স্বপন কুমার পালিত। তাঁরা প্রথম আলোকে বলেন, নির্মাণকাজে মানসম্পন্ন উপকরণ ব্যবহার না করা, ঠিকাদারদের তদারক না করার কারণে সংস্কারকাজগুলো হয় যাচ্ছেতাই রকমের। ফলে অল্প দিনেই সড়কগুলো বেহাল হয়ে পড়ে। এভাবে রাস্তা করার কারণে জনগণের অর্থের অপচয় হয়। এই অপচয় বন্ধ করার উদ্যোগ নিতে হবে।

যেসব ভালো রাস্তা নিয়ে প্রকল্প

সিটি করপোরেশনের ২ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকার নতুন প্রকল্পে ভালো অবস্থায় থাকা যে ৩৭টি সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ৩৬টি করপোরেশনেরই দুটি প্রকল্পের অধীনে আগে সংস্কার করা হয়। আরেকটি হলো আখতারুজ্জামান চৌধুরী উড়ালসড়ক, যা সিডিএ নির্মাণ করেছে।

সিটি করপোরেশনের দুই প্রকল্পের একটি ২০১৭-২০২১ মেয়াদে বাস্তবায়িত হয়েছে। শেষ হয়েছে গত জুনে। প্রকল্পের শিরোনাম ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এবং ব্রিজসমূহের উন্নয়নসহ আধুনিক যান যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও সড়ক আলোকায়ন’। এর আওতায় ৩৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৯টি সড়কের ১০৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার সংস্কার করা হয়। এগুলোর মধ্যে ১৮টি সড়কের ৩১ কিলোমিটার সিটি করপোরেশনের নতুন প্রকল্পের আওতায় আবার সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৯৩ কোটি টাকা। সড়কগুলোর অবস্থান পতেঙ্গা, আগ্রাবাদ, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, হালিশহর, টেরিবাজার ও লালখান বাজার এলাকায়।জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ‘সিটি গভর্ন্যান্স প্রকল্প’–এর আওতায় উন্নয়নকাজ চলমান থাকা ১৮টি সড়ককেও সিটি করপোরেশন ২ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকার প্রকল্পের মধ্যে সংস্কারের জন্য রেখেছে। এ জন্য প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০২ কোটি টাকা। সড়কগুলোর অবস্থান খুলশী, বাকলিয়া, পাঠানটুলী, হালিশহর, মেহেদীবাগ, চকবাজার, পাঁচলাইশ, কাতালগঞ্জ, ফিরিঙ্গীবাজার ও নাসিরাবাদ এলাকায়।সরেজমিন দেখা গেছে, নগরের মেহেদীবাগ সড়কের কিছু অংশের এক পাশ পিচ ঢালাই করা হয়েছে। বাকি অংশ খানাখন্দে ভরা। বেহাল এই সড়ক সংস্কারের কাজ চলমান রয়েছে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সড়ক স্ট্র্যান্ড রোডের সংস্কারকাজ এখনো শেষ হয়নি। এসব সড়ক নতুন প্রকল্পে সংস্কারের জন্য রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।এভাবে প্রকল্প নেওয়াটাই অপরাধ, যা দুর্নীতির পর্যায়ে পড়ে। আর সবাই মুখে মুখে সমন্বয়ের কথা বললেও আদৌ কেউ তা চান না।আখতার কবির চৌধুরী, সম্পাদক, সুজন, (চট্টগ্রাম)

পরিকল্পনা কমিশনের আপত্তি

সিটি করপোরেশনের ২ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকার নতুন প্রকল্প নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনে গত ১৬ জুন প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রকল্পের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কমিশন থেকে আপত্তি জানানো হয়।সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় অবকাঠামো নির্মাণের বিস্তারিত একক ব্যয় বিভাজন এবং এগুলোর ধারণাগত নকশা উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) যুক্ত করা হয়নি। আবার সেতু, কালভার্ট ও গোলচত্বর কোথায় নির্মিত হবে, তার স্থান উল্লেখ করা হয়নি।এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ যন্ত্রপাতি কেনা বাবদ বরাদ্দ বেশি রাখা হয়েছে বলে সভায় মন্তব্য করা হয়। প্রকল্পে ব্যবহারের জন্য ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি পাজেরো জিপ কেনার বিষয়েও আপত্তি জানিয়েছে কমিশন। এদিকে নতুন প্রকল্পের আওতায় রোড রোলার, বেক-হো লোডার, পে-লোডার ও চেইন ডোজার কেনার কথা বলা হয়েছে, যদিও সিটি করপোরেশনে এসব যন্ত্রপাতি আছে।মতামত জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ভালো রাস্তা সংষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া মানে নয়ছয় করে লুটেপুটে খাওয়া। বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে এবং সম্ভাব্যতা যাচাই করে প্রকল্প নিতে হয়। কিন্তু সিটি করপোরেশনের এই প্রকল্পের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, গৎবাঁধা উপায়ে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এভাবে প্রকল্প নেওয়াটাই অপরাধ, যা দুর্নীতির পর্যায়ে পড়ে। আর সবাই মুখে মুখে সমন্বয়ের কথা বললেও আদৌ কেউ তা চান না।

 

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page